চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ঢাকা আসছেন। আগামী অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওই সফরটি হতে পারে। সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র সফর প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র মতে, ঢাকা-বেইজিং কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছরপূর্তি উপলক্ষে চলতি বছরে চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের ঢাকা সফরের আলোচনা চলছে অনেক দিন ধরে। বছরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানাতে চিঠি দেন। সেই চিঠি এবং কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগের মধ্য দিয়ে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সফরটি হতে পারে বলে আভাস দেয় বেইজিং। ঢাকার তরফে প্রস্তাবিত সেই সময়ের বিষয়ে ইতিবাচক সায় দেয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রস্তুতি নেয়ার কথাও জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের দিন-তারিখ এখনও সুনির্দিষ্ট করে বলার সময় আসেনি। আমরা উভয়েই একটি সময়কে টার্গেট করে প্রস্তুতি শুরু করেছি। প্রেসিডেন্টের সফর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২২শে আগস্ট ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক হবে। বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে দেশটির বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী গোয়াও ইয়ান ঢাকা সফর করবেন। জেইসি বৈঠকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট আগামী ১০ থেকে ১২ই অক্টোবর ৩ দিনের সফরে ঢাকা আসতে পারেন এমন একটি ধারণা দেয়া হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে। সে মতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রস্তাবিত তারিখেই সফরটি হবে। দেশের সামপ্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চীনা প্রেসিডেন্টের সফরকালে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সফরটি সফল করতে রোববার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সেখানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সার্বিক সম্পর্ক পর্যালোচনা হয়। একই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পায়। প্রেসিডেন্টের আসন্ন সফরের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সমপ্রসারিত হওয়ার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ঢাকার কর্মকর্তারা। চীনের প্রেসিডেন্টের সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগের পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়ন এবং সামরিক সহযোগিতার বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে চায় ঢাকা। সফরকালে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হবেন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং।