পাকিস্তানে হাসপাতালে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ৫৩

Slider সারাবিশ্ব

file (1)

 

পাকিস্তানের কোয়েটায় একটি হাসপাতালে বোমা বিস্ফোরণে একজন সাংবাদিক সহ কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ জন। হাসপাতালটির ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড বা জরুরি বিভাগের গেটে এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি আত্মঘাতী হামলা ছিল। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এর দায় স্বীকার করে নি। তবে কোয়েটা হামলার জন্য ভারতকে দায়ী করেছেন বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সানাউল্লাহ জেহরি। এ হামলা হয়েছে আজ সোমবার। বেলুচিস্তান বার এসোসিয়েশনের সভাপতি এডভোকেট বিলাল আনোয়ার কাসিকে অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা গুলি করে হত্যার পর এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা প্রথমে মেঙ্গালচক এলাকায় আনোয়ার কাসির গাড়িতে গুলি করে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি সেখানে মারা যান। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভিড় ছিল আইনজীবী ও সাংবাদিকদের। কাসিকে জরুরি বিভাগে নেয়ার পর সেখানে তীব্র বিস্ফোরণ হয়। এরপর অস্ত্রধারীরা এলাপাতাড়ি গুলি করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, আহতদের বেশির ভাগই আইনজীবী। জিও নিউজ রিপোর্টে বলেছে, বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩৫ জন। পুলিশ বলেছে, বিস্ফোরণের পর পরই অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় পুরো হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর  পর পরই কোয়েটার সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ফ্রন্টিয়ার কোরের ভারি অস্ত্রধারী দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। ওদিকে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলেছে, স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে, কোয়েটার মেঙ্গাল চক এলাকায় মান্নো জান রোডে পৌঁছালে আইনজীবী কাসির গাড়িতে গুলি করে অস্ত্রধারীরা। তাকে দ্রুত সিভিল হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান। হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সানাউল্লাহ জেহরি। তিনি স্থানীয় জিও নিউজকে বলেছেন, কোয়েটায় সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে রয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং (র)। প্রাথমিকভাবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই তিনি স্থানীয় মিডিয়াকে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে এটা একটি আত্মঘাতী হামলা। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। হাসপাতালটিতে জরুরি বিভাগে যখন আইনজীবী বিলাল আনোয়ার কাসিকে নেয়া হয় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ফরিদুল্লাহ। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কাসিকে যখন হাসপাতালে নেয়া হয় তখন বেদনাহত ৫০ জনেরও বেশি মানুষ জরুরি বিভাগে প্রবেশ করে। তখনই বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জহুর আহমেদ আফ্রিদি বলেছেন, নিহতদের বেশির ভাগই আইনজীবী। বেলুচিস্তান বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ কাকার সহ বেশ কিছু আইনজীবী আহত হয়েছেন। টেলিভিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঘটনার সময় হাসপাতালে এক বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফাঁকা গুলির শব্দও শোনা গেছে হাসপাতাল চত্বরে। উপস্থিত সাংবাদিকরাও এ থেকে রেহাই পান নি। বিস্ফোরণে ডন নিউজের একজন ক্যামেরাম্যান মারাত্মক আহত হয়েছেন। আজ টিভি’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন ক্যামেরাম্যান নিহত হয়েছেন বিস্ফোরণে। এ ঘটনার পর সিন্ধু প্রদেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এডি খাজা। হামলার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। হতাহতদের মূল্যবান প্রাণহানীতে তিনি গভীর দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, বেলুচিস্তানে শান্তি বিঘিœত করতে দেয়া হবে না কাউকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *