প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিদের সাথে বিএনপি নেতাদের সম্পর্ক কি? জঙ্গিদের জন্য তাদের এতো দরদ কেন? এরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কিনা এটা দেখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘গতকালের কল্যাণপুরের ঘটনার ব্যাপারে বিএনপি’র দুই নেতা শাহ মোয়াজ্জেম ও হান্নান শাহ বলেছে, এরা জঙ্গি কিনা সন্দেহ রয়েছে। জঙ্গিদের জন্য বিএনপি নেতাদের এতো আহাজারি কেন? গুলশানে তারা যে ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করেছে, জিন্সের প্যান্ট ওপরে কালো আলখাল্লা পড়া, মাথায় একই ধরনের পাগড়ী পড়া এরপরও তাদের মনে সন্দেহের কারণ কি? এরা জঙ্গি কিনা। এটা সন্দেহের বিষয়। তাহলে তাদের কোথায় গা লাগলো। তাহলে তাদের উদ্দেশ্য কি এই জঙ্গিদের সাথে সম্পর্ক কি? এই প্রশ্ন আমি জাতির কাছে রেখে গেলাম।’
তিনি আজ দশম জাতীয় সংসদের ১১তম (বাজেট) অধিবেশনে সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যেখানে জঙ্গি দমনের চেষ্টা করছে সেখানে তারা পুলিশের কার্যক্রমকে যদি জনসাধারণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেন এর চেয়ে দুঃখের বিষয় আর কিছুই নেই। পুলিশ বাহিনী সারা রাত কষ্ট করে জঙ্গিদের দমনে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে কেউ জঙ্গিদের কোলে করে তুলে এনে লালন-পালন করে নাই। ঘটনাস্থলেই তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। ফ্রান্স, জার্মান, আমেরিকা, জাপানসহ সকল ঘটনায় জঙ্গিরা হয় নিজেরা আত্মহত্যা করেছে অথবা তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। জঙ্গি দমনের এটাই নিয়ম। এতে বিএনপি নেতাদের এত কষ্ট কেন। তাদের এত দরদ কেন, এদের সাথে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা বা ষড়যন্ত্রে এরা লিপ্ত কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গি দমনের ব্যাপারে সমগ্র জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ জঙ্গি দমন হবে এ বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। এখন অভিভাবক, শিক্ষকসহ সবাই এ ব্যাপারে সচেতন রয়েছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে দেশকে সরকার এগিয়ে নিতে চায় দেশের উন্নতি করতে চায়। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সরকার দারিদ্রের হাত থেকে মানুষকে মুক্ত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্তান সৃষ্টিতে বাঙালিদের অবদান বেশি থাকলেও বাঙালিরাই চাকরিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য সারা জীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে এদেশ আরো আগেই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাতো। এই বৈষম্যের কারণে এবং বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। স্বাধীন জাতি হওয়ার কারণেই এখন বাঙালিরা বিভিন্ন সরকারি চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উঁচু পদে আসীন হন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর থেকে দেশের মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করি। এরপর আবার ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর আবারো উন্নয়নের চাকা থেমে যায়। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নে আবারো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। দেশ এখন নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে, দারিদ্রের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
তিনি বলেন, সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই দেশ উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। প্রকাশ্যে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যাকে জনগণ যখন প্রতিহত করে তখন বিএনপি-জামায়াত আবারো বেছে বেছে মানুষ হত্যা শুরু করে। এটাও যখন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় তখন আবারো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে থাকে। তারা গুলশানে একটি হোটেলে দেশি-বিদেশীসহ বেশ কিছু মানুষকে জিম্মি করে। সেখানে উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে দুইজন পুলিশসহ বেশকিছু মানুষ মারা যায়। এরপর কমান্ডো অপারেশনের মাধ্যমে জিম্মিদের উদ্ধার করা হয়। সূত্র: বাসস