রাজধানীর কল্যাণপুরের জাহাজবাড়ির চতুর্থ তলায় গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় পাশের লাগোয়া ভবনের একই তলায় ছিলেন শামসুল আলম নামের এক তরুণ। ঘটনা চলাকালে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তিনি সাতটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তাঁর অবরুদ্ধ অবস্থার অসহায়ত্ব যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনি তা থেকে ঘটনার তাৎক্ষণিক একটি বর্ণনাও পাওয়া গেছে।
শামসুল আলম একটি অনলাইন পোর্টালে সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
রাত সোয়া একটায় শামসুল আলম প্রথম স্ট্যাটাসটি দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ইয়া আল্লাহ, আমাদের রক্ষা করুন। আমরা খুব বিপদে আছি। কল্যাণপুর ৩ নম্বর রোডে। চারপাশে শুধু জঙ্গিদের স্লোগান আর মুহুর্মুহু গুলি।’
এর ৭ মিনিট পর ১টা ২২ মিনিটে শামসুল আলম লেখেন, ‘আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা খুব বিপদে আছি। শুধু গুলি আর গুলি, জঙ্গিদের স্লোগান। কল্যাণপুর ৩ নম্বর রোড (জাহাজবাড়ি ৫ নম্বর রোডে)। জানি না বাইরে কী হচ্ছে।’ এই স্ট্যাটাস তিনি দুবার পোস্ট করেন।
রাত ১টা ৫৪ মিনিটে শামসুল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আল্লাহ আমাদের রক্ষা কর। আমরা প্রশাসনকে একাধিকবার জানাচ্ছি, তারা শুধু বলছে তারাও নাকি অপারেশনে আছে। কিন্তু আমরা শুধু জঙ্গিদেরই আওয়াজ শুনছি।’
রাত ৪টা ১৮ মিনিটে শামসুল লিখেছেন, ‘সর্বশেষ ৩টা ১৭ মিনিটে জঙ্গিদের স্লোগান আর গুলির শব্দ শুনেছি। এখন নিঃশব্দ। প্রশাসন বা জঙ্গি, কোনো পক্ষেই আওয়াজ নেই। সম্ভবত আমাদের বাসার গেট ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমাদের বাসায় সম্ভবত প্রশাসন অবস্থান করছে। তবে ১০০% নিশ্চিত বলতে পারছি না। কিছু সূত্রে জানতে পারলাম সকালে প্রশাসনের অভিযান চলবে। জানি না কী হয়। সবার কাছে দোয়া চাই। আমাদের জন্য দোয়া করুন।’
গত রাতে শামসুল আলমের অফিসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা সবাই বাসা থেকে বেরোতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে টের পাই, আমাদের বাসার দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। সম্ভবত পুলিশ তালা মেরে দিয়েছিল।’
শামসুল জানান, গত মাসের ১ তারিখ তাঁরা জাহাজবাড়ির পাশের ওই বাসায় ওঠেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে একপর্যায়ে আমরা আমাদের ভবনের নিচের কেঁচি গেট ধরে টানাটানির শব্দ শুনতে পাই। ভয়ে আমাদের ফ্ল্যাটের সব লাইট বন্ধ করে দিই, এমনকি ফ্যানও। অন্য দুই রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমরা ছয়জন রান্নাঘরে অবস্থান নিই।’
সকাল ৭টা ৫৩ মিনিটে শামসুলের স্ট্যাটাস, ‘অভিযান সমাপ্তি ঘোষণার পরও মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শুনছি। আতঙ্ক কাটছেই না।’
৮টা ১৫ মিনিটে ঘটনার একটি সারবস্তু তুলে ধরেছেন শামসুল আলম তাঁর ফেসবুকে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ঘটনার শুরু রাত সাড়ে ১২টার দিকে। আমাদের বিল্ডিংয়ের তিনতলা থেকে এক মহিলা চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকে। এরপর আমরা এবং আশপাশের বিল্ডিং থেকেও চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকি। কিছু সময় হইহল্লা চলল। হঠাৎ স্লোগান, “নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার”। ভাবলাম, চোর ধরা পড়েছে। চোর দেখতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় কয়েকবার বিকট শব্দ হলো। একজনের বক্তৃতার আওয়াজ পেলাম। “দুনিয়া যার, আইন চলবে তার”। “ইসলামের শত্রুরা নিপাত যাক”। “তোমরা কাফের-মুসরিক, তোমরা জাহান্নামি”’ ইত্যাদি।
এরপর আরও লিখেছেন, ‘আমরা ৪র্থ তলায় থাকি, জঙ্গিরাও ৪র্থ তলায়। স্বাভাবিকভাবেই জঙ্গিদের রুম থেকে আমাদের রুমের ব্যবধান ৫-১০ হাত। এ সময় হঠাৎ পাশের রুম থেকে বড় ভাইয়েরা এসে বলল জঙ্গি হামলা। এরপর সব নিস্তব্ধ। শুধু জঙ্গিদের স্লোগান আর গুলির শব্দ। ১০-১৫ মিনিট পরপর জঙ্গিদের স্লোগান আর গুলির শব্দে রাত পেরিয়ে ভোর ৬টা। এরপর শুরু হলো মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। জানতে পারলাম, ৯ জন জঙ্গিই মারা গেছে। অভিযান সমাপ্ত। কিন্তু অভিযান সমাপ্তির আধা ঘণ্টা পরও প্রায় ১০-১৫ রাউন্ড গুলির শব্দ পেলাম। কী যে আতঙ্ক আর উদ্বেগের মধ্যে রাতটা গেল আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা সুস্থ আছি। তবে এ ঘটনা এখানেই শেষ না। আমাদের বিল্ডিংয়ের সব ফ্ল্যাটেই বাহির থেকে তালা দেওয়া। রুম থেকে বের হতে পারছি না। পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য আপনাদের দোয়া প্রার্থনা করছি।’
শামসুল আলম একটি অনলাইন পোর্টালে সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
রাত সোয়া একটায় শামসুল আলম প্রথম স্ট্যাটাসটি দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ইয়া আল্লাহ, আমাদের রক্ষা করুন। আমরা খুব বিপদে আছি। কল্যাণপুর ৩ নম্বর রোডে। চারপাশে শুধু জঙ্গিদের স্লোগান আর মুহুর্মুহু গুলি।’
এর ৭ মিনিট পর ১টা ২২ মিনিটে শামসুল আলম লেখেন, ‘আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা খুব বিপদে আছি। শুধু গুলি আর গুলি, জঙ্গিদের স্লোগান। কল্যাণপুর ৩ নম্বর রোড (জাহাজবাড়ি ৫ নম্বর রোডে)। জানি না বাইরে কী হচ্ছে।’ এই স্ট্যাটাস তিনি দুবার পোস্ট করেন।
রাত ১টা ৫৪ মিনিটে শামসুল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আল্লাহ আমাদের রক্ষা কর। আমরা প্রশাসনকে একাধিকবার জানাচ্ছি, তারা শুধু বলছে তারাও নাকি অপারেশনে আছে। কিন্তু আমরা শুধু জঙ্গিদেরই আওয়াজ শুনছি।’
রাত ৪টা ১৮ মিনিটে শামসুল লিখেছেন, ‘সর্বশেষ ৩টা ১৭ মিনিটে জঙ্গিদের স্লোগান আর গুলির শব্দ শুনেছি। এখন নিঃশব্দ। প্রশাসন বা জঙ্গি, কোনো পক্ষেই আওয়াজ নেই। সম্ভবত আমাদের বাসার গেট ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমাদের বাসায় সম্ভবত প্রশাসন অবস্থান করছে। তবে ১০০% নিশ্চিত বলতে পারছি না। কিছু সূত্রে জানতে পারলাম সকালে প্রশাসনের অভিযান চলবে। জানি না কী হয়। সবার কাছে দোয়া চাই। আমাদের জন্য দোয়া করুন।’
গত রাতে শামসুল আলমের অফিসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা সবাই বাসা থেকে বেরোতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে টের পাই, আমাদের বাসার দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। সম্ভবত পুলিশ তালা মেরে দিয়েছিল।’
শামসুল জানান, গত মাসের ১ তারিখ তাঁরা জাহাজবাড়ির পাশের ওই বাসায় ওঠেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে একপর্যায়ে আমরা আমাদের ভবনের নিচের কেঁচি গেট ধরে টানাটানির শব্দ শুনতে পাই। ভয়ে আমাদের ফ্ল্যাটের সব লাইট বন্ধ করে দিই, এমনকি ফ্যানও। অন্য দুই রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমরা ছয়জন রান্নাঘরে অবস্থান নিই।’
সকাল ৭টা ৫৩ মিনিটে শামসুলের স্ট্যাটাস, ‘অভিযান সমাপ্তি ঘোষণার পরও মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শুনছি। আতঙ্ক কাটছেই না।’
৮টা ১৫ মিনিটে ঘটনার একটি সারবস্তু তুলে ধরেছেন শামসুল আলম তাঁর ফেসবুকে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ঘটনার শুরু রাত সাড়ে ১২টার দিকে। আমাদের বিল্ডিংয়ের তিনতলা থেকে এক মহিলা চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকে। এরপর আমরা এবং আশপাশের বিল্ডিং থেকেও চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকি। কিছু সময় হইহল্লা চলল। হঠাৎ স্লোগান, “নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার”। ভাবলাম, চোর ধরা পড়েছে। চোর দেখতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় কয়েকবার বিকট শব্দ হলো। একজনের বক্তৃতার আওয়াজ পেলাম। “দুনিয়া যার, আইন চলবে তার”। “ইসলামের শত্রুরা নিপাত যাক”। “তোমরা কাফের-মুসরিক, তোমরা জাহান্নামি”’ ইত্যাদি।
এরপর আরও লিখেছেন, ‘আমরা ৪র্থ তলায় থাকি, জঙ্গিরাও ৪র্থ তলায়। স্বাভাবিকভাবেই জঙ্গিদের রুম থেকে আমাদের রুমের ব্যবধান ৫-১০ হাত। এ সময় হঠাৎ পাশের রুম থেকে বড় ভাইয়েরা এসে বলল জঙ্গি হামলা। এরপর সব নিস্তব্ধ। শুধু জঙ্গিদের স্লোগান আর গুলির শব্দ। ১০-১৫ মিনিট পরপর জঙ্গিদের স্লোগান আর গুলির শব্দে রাত পেরিয়ে ভোর ৬টা। এরপর শুরু হলো মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। জানতে পারলাম, ৯ জন জঙ্গিই মারা গেছে। অভিযান সমাপ্ত। কিন্তু অভিযান সমাপ্তির আধা ঘণ্টা পরও প্রায় ১০-১৫ রাউন্ড গুলির শব্দ পেলাম। কী যে আতঙ্ক আর উদ্বেগের মধ্যে রাতটা গেল আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা সুস্থ আছি। তবে এ ঘটনা এখানেই শেষ না। আমাদের বিল্ডিংয়ের সব ফ্ল্যাটেই বাহির থেকে তালা দেওয়া। রুম থেকে বের হতে পারছি না। পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য আপনাদের দোয়া প্রার্থনা করছি।’