ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্মরণিকায় ‘ইতিহাস বিকৃতির’ ঘটনায় উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির কাছে আমি নিবেদন করছি- তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হোক, যিনি বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করেন না।”
গত ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমান হলের ক্ষেত্রে জেনারেল জিয়াকে ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে লেখা হয়, তিনি “বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা, যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত।”
স্মরণিকাটি প্রকাশের পর প্রতিবাদের মুখে সেটি বাজেয়াপ্তের পাশাপাশি প্রকাশনার দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-ভাংচুরের এক পর্যায়ে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের পদত্যাগ দাবিতে তার বাসার সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ নেতকর্মীরা।দিনভর প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর রাতে আন্দোলন থেকে সরে এলেও মাঝে উপাচার্য থাকা অবস্থায় তার গাড়ি ভাংচুর করেন বিক্ষুব্ধরা।
ওই প্রসঙ্গ তুলে সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) বাবলু বলেন, “আমরা এখানে যারা বসে আছি এর অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এই বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন ও সংগ্রামের প্রতীক, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। ছাত্র সংগ্রামের প্রতীক। এই বিশ্ববিদ্যালয় এক সময়ে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে গর্ব করতাম।
“সেখানে জাতিক জনক বঙ্গবন্ধুকে বলা হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু লেখেনি। লেখা হয়েছে, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা। যিনি পূর্বপাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রামে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশে জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত। বলেন এটি কি লিখতে পারে অফিসিয়াল স্টেটমেন্টে?
“এখানে বলা হয়েছে, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে এটা আমার গায়ে লেগেছে। জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, এটা লিখতে পারে? ভাইস চ্যান্সেলর কী করেছেন? স্মরণিকায় ভাইস চ্যান্সেলরের ছবি আছে। তিনি স্বাক্ষর করেছেন।”
আরেফিন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ করে বাবলু বলেন, “কারা ভিসি হয়, আমরা জানি। এটা আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত।”