যশোর পুলিশের জঙ্গি তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না নববধূকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। তাকে ধরিয়ে দিতে যশোর পুলিশের পক্ষ থেকে পোস্টারিং করা হয়েছিল। ঘোষণা করা হয়েছিল মোটা অংকের পুরস্কার। মুন্নার পরিবারকে নিয়ে চলছিল টানাহেঁচড়া। নববধূকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পর গতকাল সকালে যশোর কোতোয়ালি পুলিশ মুন্নাকে তাদের হেফাজতে নিয়েছে। সম্প্রতি যশোর পুলিশ ৫ জনকে জঙ্গি কানেকশনে অভিযুক্ত দেখিয়ে শহরে ব্যাপক পোস্টারিং করে। ওই পোস্টারের শীর্ষে নাম ছিল শহরের শংকরপুর এলাকার গোলপাতা মসজিদ এলাকার চা দোকানি আবদুস সোবহানের ছেলে কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্নার নাম ও ছবি। ওই পোস্টারিংয়ের পর ছেলের নিখোঁজ রহস্য উদঘাটনে মরিয়া হয়ে ওঠে তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি।
এ অবস্থার মধ্যে গতকাল সোমবার ভোরে বাবার সঙ্গে স্ত্রী ও শ্বশুরপক্ষের তিন আত্মীয়সহ মুন্না শঙ্করপুরের বাসায় ফেরেন। মুন্না বাসায় ফিরেছে এমন খবর চাউর হওয়ার পরপরই মিডিয়ার কর্মীরা হাজির হন তার বাসায়। এ সময় মিডিয়া কর্মীদের নানা প্রশ্নের মুখে মুন্না দাবি করেন তিনি জঙ্গি নন। যশোর এসে শুনছেন পুলিশ তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য নাম-ছবিসহ পোস্টার ছেপেছে। যশোর পুলিশের ছাপানো জঙ্গি তালিকা সম্বলিত পোস্টারে নিজের নাম ও ছবি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুন্না। তিনি বলেন, ‘মায়ের ওপর রাগ করে বাড়ি ছাড়ি। ঢাকায় ছিলাম বছর তিনেক। প্রথমে ডেকোরেটরের দোকানে, পরে প্লাস্টিক কারখানায় কাজ নিয়েছি। কাজ করে খাই। বিয়েও করেছি। কোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
মুন্না দাবি করেন, বছর তিনেক আগে তিনি মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে বাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। বহু ঘোরাঘুরির পর তিনি জিঞ্জিরার খেজুরবাগ বালুরচর এলাকায় রফিকের ডেকোরেটরের দোকানে কাজ নেন। সেখানে তিনি এক বছর কাজ করার পর ভালো বেতনের অফার পেয়ে দুই বছর ধরে ইসলামবাগ এসি মসজিদ গলির জনৈক ডিশ মাহমুদের প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করছেন। সেখানে পরিচয় হয় বাংলাবাজারের বই সাপ্লায়ার মনির খানের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে। প্রথমে তাদের মধ্যে প্রেম হয়, পরে মাস ছয়েক আগে অনানুষ্ঠানিক বিয়ে। বাবা আবদুস সোবহান পরশু (শনিবার) তার সন্ধানে ঢাকা গেলে তাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়। রাতে রওনা দিয়ে সোমবার ভোরে স্ত্রী ইয়াসমিন, এক শ্যালিকা ও দুই নানিশাশুড়িকে নিয়ে আমি যশোর ফিরেছি’- জানান মুন্না।
এর আগে গত শনিবার মুন্নার বাবা আবদুস সোবহান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দাবি করেন, তার ছেলে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত না।
সোবহান শহরের শঙ্করপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার জনৈক মুরাদ হাজির বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে সপরিবারে বসবাস করেন। তারা শরীয়তপুরের মানুষ। বাবার কর্মসূত্রে যশোর আগমন। ভাঙারির কারবার থেকে শুরু করে রিকশা চালানো পর্যন্ত সবই করেছেন। শারীরিক সমস্যার কারণে এখন আর ভারি কাজ করতে পারেন না। তাই এলাকায় একটি চায়ের দোকান দিয়ে বসেছেন। চার ছেলেমেয়ের জনক সোবহান। মেয়ে দুটিকে বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে দুটি বাবার সামর্থ্যহীনতায় নিজেদের চেষ্টায় অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখেছে। বড় ছেলে মুন্না ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ডিগ্রিতে ভর্তি হয়েছিল। এর আগে সে মামার ভাঙারির দোকানে কাজ করে লেখাপড়া চালিয়েছে বেশ কয়েক বছর। পরে পড়াশোনা ত্যাগ করে ইজিবাইক চালাতো। আর ছোট ছেলে আবদুল আহাদ যশোর এমএম কলেজে বিএ ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। সে কোচিং চালিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই জোগাড় করে।
‘প্রায় তিন বছর আগে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইপিএল) নিয়ে জুয়া শুরু করে স্থানীয় একটি চক্র। এর হোতা গোলপাতা মসজিদ এলাকার এরশাদের ছেলে কলিম। গরিবের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও মুন্না এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে মা কমলা বানুর বকুনি খেয়ে এক কাপড়ে ঘর ছাড়ে মুন্না’- বলছিলেন ৫৪ বছর বয়সী আবদুস সোবহান। তখন থেকে তার সঙ্গে পরিবারের তেমন যোগাযোগ ছিল না বলে দাবি করেন সোবহান। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে দেশদ্রোহী হলে তার সাজা হোক। কিন্তু বিনাদোষে যেন শাস্তির শিকার না হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে সোবহান বলেন, ‘মুন্না ধর্মকর্ম খুব একটা করতো না। শুক্রবারের দিন বকাঝকা করে তাকে জুমার নামাজ পড়তে নিয়ে যেতাম।’
সোমবার সকালে সোবহানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে আস্তে আস্তে লোকের ভিড় বাড়ছে। অনেকে মুন্নাকে দেখতে আসছে। অনেকে দেখতে আসছে মুন্নার নববিবাহিত স্ত্রীকে। আবার অনেকে ‘জঙ্গির খাতায় নাম ওঠা’ নতুন মুন্না কেমন তা দেখতে আসছে। করছে কানাঘুষা। মা কমলা বানু দীর্ঘদিন পর ছেলেকে কাছে পেয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন। আর বাবা আবদুস সোবহান এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের নিয়ে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন।
পুলিশ হেফাজতে মুন্না: গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীকে নিয়ে মুন্না যশোর কোতোয়ালি থানায় হাজির হন। পরে সেখানে পুলিশ সুপার আসেন। তিনি জানান, মুন্নার অজ্ঞাতবাসের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হবে। তারপর আইনগত ব্যবস্থা নাকি পরিবারের হাতে ফেরত, তা নির্ধারণ করা হবে।
এ অবস্থার মধ্যে গতকাল সোমবার ভোরে বাবার সঙ্গে স্ত্রী ও শ্বশুরপক্ষের তিন আত্মীয়সহ মুন্না শঙ্করপুরের বাসায় ফেরেন। মুন্না বাসায় ফিরেছে এমন খবর চাউর হওয়ার পরপরই মিডিয়ার কর্মীরা হাজির হন তার বাসায়। এ সময় মিডিয়া কর্মীদের নানা প্রশ্নের মুখে মুন্না দাবি করেন তিনি জঙ্গি নন। যশোর এসে শুনছেন পুলিশ তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য নাম-ছবিসহ পোস্টার ছেপেছে। যশোর পুলিশের ছাপানো জঙ্গি তালিকা সম্বলিত পোস্টারে নিজের নাম ও ছবি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুন্না। তিনি বলেন, ‘মায়ের ওপর রাগ করে বাড়ি ছাড়ি। ঢাকায় ছিলাম বছর তিনেক। প্রথমে ডেকোরেটরের দোকানে, পরে প্লাস্টিক কারখানায় কাজ নিয়েছি। কাজ করে খাই। বিয়েও করেছি। কোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
মুন্না দাবি করেন, বছর তিনেক আগে তিনি মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে বাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। বহু ঘোরাঘুরির পর তিনি জিঞ্জিরার খেজুরবাগ বালুরচর এলাকায় রফিকের ডেকোরেটরের দোকানে কাজ নেন। সেখানে তিনি এক বছর কাজ করার পর ভালো বেতনের অফার পেয়ে দুই বছর ধরে ইসলামবাগ এসি মসজিদ গলির জনৈক ডিশ মাহমুদের প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করছেন। সেখানে পরিচয় হয় বাংলাবাজারের বই সাপ্লায়ার মনির খানের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে। প্রথমে তাদের মধ্যে প্রেম হয়, পরে মাস ছয়েক আগে অনানুষ্ঠানিক বিয়ে। বাবা আবদুস সোবহান পরশু (শনিবার) তার সন্ধানে ঢাকা গেলে তাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়। রাতে রওনা দিয়ে সোমবার ভোরে স্ত্রী ইয়াসমিন, এক শ্যালিকা ও দুই নানিশাশুড়িকে নিয়ে আমি যশোর ফিরেছি’- জানান মুন্না।
এর আগে গত শনিবার মুন্নার বাবা আবদুস সোবহান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দাবি করেন, তার ছেলে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত না।
সোবহান শহরের শঙ্করপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার জনৈক মুরাদ হাজির বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে সপরিবারে বসবাস করেন। তারা শরীয়তপুরের মানুষ। বাবার কর্মসূত্রে যশোর আগমন। ভাঙারির কারবার থেকে শুরু করে রিকশা চালানো পর্যন্ত সবই করেছেন। শারীরিক সমস্যার কারণে এখন আর ভারি কাজ করতে পারেন না। তাই এলাকায় একটি চায়ের দোকান দিয়ে বসেছেন। চার ছেলেমেয়ের জনক সোবহান। মেয়ে দুটিকে বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে দুটি বাবার সামর্থ্যহীনতায় নিজেদের চেষ্টায় অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখেছে। বড় ছেলে মুন্না ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ডিগ্রিতে ভর্তি হয়েছিল। এর আগে সে মামার ভাঙারির দোকানে কাজ করে লেখাপড়া চালিয়েছে বেশ কয়েক বছর। পরে পড়াশোনা ত্যাগ করে ইজিবাইক চালাতো। আর ছোট ছেলে আবদুল আহাদ যশোর এমএম কলেজে বিএ ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। সে কোচিং চালিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই জোগাড় করে।
‘প্রায় তিন বছর আগে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইপিএল) নিয়ে জুয়া শুরু করে স্থানীয় একটি চক্র। এর হোতা গোলপাতা মসজিদ এলাকার এরশাদের ছেলে কলিম। গরিবের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও মুন্না এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে মা কমলা বানুর বকুনি খেয়ে এক কাপড়ে ঘর ছাড়ে মুন্না’- বলছিলেন ৫৪ বছর বয়সী আবদুস সোবহান। তখন থেকে তার সঙ্গে পরিবারের তেমন যোগাযোগ ছিল না বলে দাবি করেন সোবহান। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে দেশদ্রোহী হলে তার সাজা হোক। কিন্তু বিনাদোষে যেন শাস্তির শিকার না হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে সোবহান বলেন, ‘মুন্না ধর্মকর্ম খুব একটা করতো না। শুক্রবারের দিন বকাঝকা করে তাকে জুমার নামাজ পড়তে নিয়ে যেতাম।’
সোমবার সকালে সোবহানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে আস্তে আস্তে লোকের ভিড় বাড়ছে। অনেকে মুন্নাকে দেখতে আসছে। অনেকে দেখতে আসছে মুন্নার নববিবাহিত স্ত্রীকে। আবার অনেকে ‘জঙ্গির খাতায় নাম ওঠা’ নতুন মুন্না কেমন তা দেখতে আসছে। করছে কানাঘুষা। মা কমলা বানু দীর্ঘদিন পর ছেলেকে কাছে পেয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন। আর বাবা আবদুস সোবহান এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের নিয়ে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন।
পুলিশ হেফাজতে মুন্না: গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীকে নিয়ে মুন্না যশোর কোতোয়ালি থানায় হাজির হন। পরে সেখানে পুলিশ সুপার আসেন। তিনি জানান, মুন্নার অজ্ঞাতবাসের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হবে। তারপর আইনগত ব্যবস্থা নাকি পরিবারের হাতে ফেরত, তা নির্ধারণ করা হবে।