বাবুল চাকরিতে আছেন, অফিস করেন না–আইজিপি

Slider জাতীয় টপ নিউজ

d3a5237e6a7844d27f2dc2d5ca3d477a-asp

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার চাকরিতে বহাল আছেন। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরের নাসিরাবাদ এলাকায় পুলিশের অফিসার্স মেস উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
শহীদুল হক বলেন, বাবুল আক্তার চাকরিতে বহাল আছেন। কিন্তু পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স আসছেন না। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করেন না। অফিসেও আসেন না। এ ক্ষেত্রে তিনি দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইজিপি বলেন, শুনেছি, বাবুল আক্তার মানসিকভাবে বিষণ্নতায় ভুগছেন। চাকরি করার মতো মানসিক অবস্থা তাঁর নেই। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি রয়েছে দাবি করে আইজিপি বলেন, প্রধান আসামি মুছাকে গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো বিষয়টি আয়নার মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন শপিং মলে জঙ্গি হামলার যে কথা শোনা যাচ্ছে, তা গুজব ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এ ধরনের গুজব রটাচ্ছে। জঙ্গিরা আগাম ঘোষণা দিয়ে কোথাও হামলা করে না। একটি ঘটনাও আগাম জানিয়ে করা হয়নি। জঙ্গি হামলা হবে না তা বলা যাবে না, তা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। জঙ্গিরা যাতে কোনো রকমের নাশকতামূলক কাজ না করতে পারে, সে জন্য যত রকম কৌশল আছে, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব প্রয়োগ করছে। আমরা মনে করি না এ মুহূর্তে বড় কিছু হয়ে যাবে, তবে সম্পূর্ণভাবে বলব না, কোনো ঘটনা ঘটাতে তারা পারবে না। তবে জঙ্গিদের অধিকাংশই আইনের আওতায় আছে।’

র‍্যাবের ২৬২ জনের তালিকা প্রসঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো তালিকা দেওয়া হয়নি। র‍্যাবের তালিকাটি যাচাই-বাছাই করছে পুলিশ। পুলিশ এখনো তালিকা তৈরি করেনি। পুলিশ মাঠে গিয়ে ওয়ান টু ওয়ান যাচাই করছে। এরপর বোঝা যাবে কারা মিসিং হয়েছে, কারা জঙ্গির কারণে চলে গেছে। যখন পুলিশের তালিকা তৈরি হবে, সাংবাদিকদের মাধ্যমে তা জাতিকে জানানো হবে।

গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার ২৬ জুন চট্টগ্রাম আদালতে জবানবন্দি দেন। এতে তাঁরা উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডে ওয়াসিম, আনোয়ার, মো. রাশেদ, নবী, মো. শাহজাহান, কামরুল সিকদার ওরফে মুছা ও মো. কালু অংশ নেন। এঁদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলে ছিলেন ওয়াসিম, মুছা ও নবী। মাহমুদাকে ছুরিকাঘাত করেন নবী। ভোলা অস্ত্র সরবরাহ করেন।

গত ২৪ জুন গভীর রাতে খিলগাঁও নওয়াপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুলকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় তাঁকে। স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে তিনি সেখানেই আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা ঘটনার পর প্রথম আলোকে বলেন, ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর তিন কর্মকর্তা বাবুলকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখনই তাঁর পদত্যাগপত্রে সই নেওয়া হয়। তাঁকে পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করা না-করা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়েছিল—হয় তাঁকে বাহিনী ছাড়তে হবে, নইলে স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *