স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, কঠিন সময় পার করছি। সর্তক থাকুন। কথা-বার্তা সর্তকতার সাথে বলুন।
আজ বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু-শিরীন) কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভায় মোহাম্মদ নাসিম একথা বলেন।
নাসিম আরো বলেন, অতীতেও চক্রান্ত হয়েছে। ২০১৩ ও ১৪তে চক্রান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেই চক্রান্ত আমরা রুখে দিয়েছি। ভবিষ্যতেও তা রুখবো। তবে জনগণকে ঐকবদ্ধ থাকতে হবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ভয় পাই না। ভয়কে জয় করতে হবে।
তিনি বলেন, পাড়া মহল্লায় ঐক্য করতে হবে। সর্বস্তরের জনগণকে এই ঐক্য গড়তে হবে। তবে তিনি বিএনপির সাথে ঐক্য করার ব্যাপারে আপত্তি তুলেন।
তিনি বলেন, ’৭১-এর দালাল আর ’৭৫-এর ঘাতকদের সাথে কোনো ঐর্য হতে পারে র্য
তিনি বলেন, যারা উগ্রবাদিরে সাথে জোট বাঁধে তাদের সাথে ঐক্য ১০ মিনিটও টিকবে না। সেই ঐক্যের মাধ্যমে তারা নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পাতবে।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রকৃত ঐক্য চাইলে জামায়াতকে ত্যাগ করতে হবে।
নাসিম বলেন, ১৪ দল ঐক্যের প্রতীক। এই ঐক্য শুধুমাত্র নির্বাচন আর ক্ষমতা ভাগাভাগির ঐক্য নয়। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঐক্য। খালেদা জিয়া মুখে ঐক্যের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে তিনি ঐক্য চান না। তাদের সাথে ঐক্য করলে তা পাঁচ মিনিট, ১০ মিনিট পরে ভেঙে যাবে। ফলে শুধু শুধু লোক দেখানো ঐক্য কেন করবো আমরা?
৪০তম তাহের দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
ইনু তার বক্তব্যে বলেন, ইতিহাসে আজ কর্নেল তাহের ও জিয়াউর রহমান দুটি পৃথক পরিচয়। জিয়া ইতিহাসের খলনায়ক, বেঈমান হিসেবে চিহিক্রত হয়েছেন। আর কর্নেল তাহের ইতিহাসের মহানায়ক। কর্নেল তাহেরকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান ক্যান্টনমেন্টে কসাইখানা করেছিলেন, জামায়াতকে রাজনীতিতে এনেছেন,সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষ রোপন করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া দেশে আগুণ সন্ত্রাস, জেএমবি, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। এসব জঙ্গিরা দেশের শত্রু। এদের বিরুদ্ধে আজ যে যুদ্ধ তা শুধু শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ, জাসদের যুদ্ধ নয়। পুরো জাতির যুদ্ধ। এই যুদ্ধে জঙ্গি আর তাদের দোসরদের ধ্বংস করে দিতে হবে।
অন্যদের মধ্যে মধ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, কর্নেল তাহেরকে হত্যার মাধ্যমে একটি বিপ্লবী চেতনাকে হত্যা করা হয়েছে।
জাসদ ও বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দল নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ইতিহাসের খণ্ডিত অংশ দিয়ে সময়ের সঠিক মুল্যায়ন হবে না। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখন কেই কথা বলবেন তখন খণ্ডিত বা বিকৃত করে বলবেন না।
তিনি বলেন, তাহের একটি অনুপ্রেরণার নাম, একজন বীরের নাম।
কর্নেল তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের বলেন, ১০ মার্চ জাসদের জাতীয় সম্মেলন দেখে যে আশা জেগেছিলো। কিন্তু পরদিনই তা ভেঙে গেলো। কমিটি গঠনের মতানৈক্যে আমিসহ হাজার হাজার কর্মী বেদনাহত, দুঃখিত হয়েছি। দল ভেঙে গেলে তৃণমূলের একজন কর্মীর হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হয় তা আমার হৃদয়েও হয়। কর্নেল তাহেরের আত্মার শান্তির জন্য দেশের জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্ক নেই। কারণ আজ ব্যক্তি দল কেউ নিরাপদ নয়। সবাই একসাথে চলতে চাই। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একসাথে চলার আহবান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় ঢাবি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবিব, কবি অসীম সাহা, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপিসহ জাতীয় ও দলীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
– See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/137772#sthash.kfDohT7X.dpuf