হিজাবধারী সাংবাদিককে নিয়ে দ্য সানের কলামে তীব্র বিতর্ক

Slider বিনোদন ও মিডিয়া সারাদেশ সারাবিশ্ব

23278_naz-2

 

বৃটিশ গণমাধ্যম চ্যানেল ফোরের হিজাব পরিহিতা এক নারী সাংবাদিককে নিয়ে দেশটিরই অন্যতম শীর্ষ পত্রিকা দ্যা সানে প্রকাশিত এক কলামে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কলামিস্ট ও পত্রিকাটির সাবেক স¤পাদক কেলভিন ম্যাকেঞ্জির ইঙ্গিতটা ছিল, মুসলিম ও হিজাবধারী হওয়ায় ওই নারী সাংবাদিকের উচিৎ হয়নি ফ্রান্সের নিস হামলা কাভার করা, কেননা ওই হামলা এক মুসলিমই চালিয়েছে। এ কলামটির বিরুদ্ধে বৃটেনের প্রেস রেগুলেটরে এখন পর্যন্ত ৩০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রেস রেগুলেটর কর্তৃপক্ষ (আইপিএসও) জানিয়েছে, বেশিরভাগ অভিযোগে তথ্যের সত্যতা, বৈষম্য ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন অভিযোগকারীরা। চ্যানেল ফোর কর্তৃপক্ষও কলামটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ম্যাকেঞ্জির মন্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ ও ‘স¤পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়েছে চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষ। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান ও ইন্ডিপেনডেন্ট।
নিজের কলামে ম্যাকেঞ্জি লিখেন, যখন মুসলিম নারী সাংবাদিক ফাতিমা মঞ্জি নিস সন্ত্রাসী হামলার কভারেজে উপস্থাপনা করছিলেন, তখন তিনি ‘নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না’। এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ফাতিমা মঞ্জির কর্মস্থল চ্যানেল ফোর। এক বিবৃতিতে চ্যানেলটি জানিয়েছে, ‘আজ দ্য সানে মি. ম্যাকেঞ্জির যে মন্তব্য কলাম ছাপা হয়েছে, তা আপত্তিজনক, স¤পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং তর্কসাপেক্ষে এটি ধর্মীয় ও এমনকি জাতিগত বিদ্বেষ উস্কে দেয়ার সমতুল্য।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘একজন যোগ্য সাংবাদিককে কোন নির্দিষ্ট ঘটনায় বা কোন নির্দিষ্ট দিনে রিপোর্টিং করা থেকে বিরত রাখতে হবে শুধুমাত্র তার ধর্মবিশ্বাসের কারণে Ñ এমন কিছু ইঙ্গিত করাটা ভুল। ফাতিমা মঞ্জি একজন পুরষ্কারজয়ী সাংবাদিক। আমরা গর্বিত যে তিনি আমাদের দলের অংশ। এবং তার (ম্যাকেঞ্জির) মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সবসময়ের মতো তাকে (ফাতিমা) আমাদের পূর্ণ সমর্থন দেব।’
নিজের কলামে ম্যাকেঞ্জি লিখেছেন, ‘ওই উপস্থাপিকা কৃষ্ণ গুরু মার্থি, ম্যাট ফ্রেই বা ক্যাথি নিউম্যানদের মতো চ্যানেল ফোরের নিয়মিতদের কেউ ছিলেন না, ছিলেন একজন হিজাব পরিহিতা তরুণী। এক মুসলিমের দ্বারা যখন আবার আরেকটি জঘন্য হত্যাযজ্ঞ হয়ে গেল, তখন তার জন্য ক্যামেরার সামনে থাকাটা কি যথার্থ ছিল?’
ম্যাকেঞ্জি আরও লিখেন, ‘এটা কি কোন সাধারণ দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য করা হয়েছে যে কিনা হিজাবকে দেখে পুরুষতান্ত্রিক ও ¯পষ্টতই সহিংস একটি ধর্মের দ্বারা মুসলিম নারীদের দাসত্বের নমুনা হিসেবে? অমৃতসরের সোনালী মন্দিরের ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর রিপোর্টিং-এ চ্যানেল ফোরের স¤পাদক কি কোন হিন্দুকে ব্যবহার করেছেন? অবশ্যই নয়।’
এ ঘটনায় টুইট করেছেন কনজারভেটিভ দলের সাবেক মন্ত্রী ও নেতা ব্যারোনেস ওয়ারসি। তিনি দ্য সানের স¤পাদক টনি গ্যালাঘেরকে চিঠি লিখে ওই ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী কলামে’র সমালোচনা করেছেন। বৃটেনের সাংবাদিকদের সংগঠন ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টও ওই কলামের নিন্দা জানিয়েছে, পাশাপাশি প্রকাশের জন্য দ্য সানের সমালোচনা করেছে।
এমনকি দ্য সান এ কলামের একটি লিংক নিজেদের টুইটার অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেও, পরে মুছে দেয়। সোমবার সন্ধ্যার দিকে খোদ দ্য সানের অনলাইন সংস্করণে পত্রিকাটিরই একজন মুসলিম ফিচার লেখক ওই কলামের বিরুদ্ধে একটি নিবন্ধ লিখেন। যদিও ওই নিবন্ধ প্রিন্ট সংস্করণে ছাপেনি পত্রিকাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *