বাংলাদেশ ও ফ্রান্সে পরপর সন্ত্রাসী হানার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বিশেষ করে কলকাতাস্থ বিদেশি দূতাবাস, ৩২টি রেল স্টেশনসহ শহরের নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কলকাতার হোটেলগুলিতে ঘরভাড়া দেবার ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশ পাঠানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে। জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কোন নাগরিক কলকাতায় হোটেলে ঘরভাড়া নিতে চাইলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। হোটেলে হোটেলে ঘুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হোটেলে বিদেশি অতিথি এলে তাঁর পাসপোর্ট ও ভিসা পরীক্ষা করে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ছবি ও পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি কলকাতা পুলিশের ডেটাবেসে পাঠিয়ে দেয়ার কাজটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে শহরের অধিকাংশ মাঝারি হোটেলই এই পদ্ধতি মানে না। তবে এবার তাদেরও সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। আরও কিছু নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। প্রত্যেক অতিথির পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস রয়েছে এমন পরিচয় পত্রের আসল কপি দেখেই ঘর দেয়া হবে। পরিচয়পত্রের ফটোকপি কোনভাবেই গ্রাহ্য করা হবে না। আর বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের নাগরিক এলে বিশেষ সতর্কতা নিতে হবে। সামান্য সন্দেহ হলেই স্থানীয় থানা কিংবা লালবাজারকে জানাতে হবে। নিয়ম ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না তা দেখতে নিয়মিত বিভিন্ন হোটেলে ঢুঁ মারছেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। এদিকে সম্প্রতি কলকাতাস্থ ফ্রান্স, রাশিয়া, ইতালি, জার্মান ও জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা কলকাতার পুলিশের হেডকোয়ার্টার লালবাজারে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় নিরাপত্তার প্রশ্নে বিদেশি দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। রাজীব কুমার জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যে বিদেশি দূতাবাসের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ৩২টি রেলস্টেশনকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সব রেলস্টেশনে যে কোনো সময় জঙ্গিরা হামলা করতে পারে আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গের ৩২টি স্পর্শকাতর রেল স্টেশনকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা স্টেশন ছাড়া অন্যান্য স্টেশনের মধ্যে রয়েছে দমদম, বালিগঞ্জ, বিধাননগর, বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, খড়গপুর, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, শালবনি, মনোহরপুর, সরডিহা, ভদুতলা, গইলকেরা ইত্যাদি স্টেশন। এসব স্টেশনে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি। কলকাতা মেট্রো বা পাতাল রেলের নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি সেখানে নিয়োগ করা হচ্ছে কমান্ডো বাহিনী।