চলতি প্রজন্মের সুকন্ঠি শিল্পী ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী। হৃদয় খানের হাত ধরে ২০১২ সালে সংগীত জগতে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি। এগিয়ে যাচ্ছেন নিজের মতো করে। গত বছর ইমরানের সুর ও সংগীতে প্রকাশ হয় তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘ঐশী এক্সপ্রেস’। তার পর পরই গানবাংলা চ্যানেলের ‘এয়ারটেল স্পটলাইট’ শীর্ষক আয়োজনে পবন দাস বাউলের গাওয়া বিখ্যাত গান ‘দিল কি দয়া হয় না’ গেয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। গেলো ঈদেও নতুন গান ও ভিডিওর মধ্য দিয়ে শ্রোতাদের মাঝে ছিলেন এ শিল্পী। বিশেষ করে ঐশীর ‘মায়া’ অ্যালবামের শীর্ষ সংগীতটির ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে ঈদ উপলক্ষে। ভিডিও পরিচালনা করেছেন চন্দন রয় চৌধুরী। এ গানটির মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন ঐশী। কারণ গানটির অডিও এবং ভিডিও এরই মধ্যে প্রশংসিত হচ্ছে সর্বমহলে। পাশাপাশি গানটিতে নতুন লুকেও দেখা গেছে ঐশীকে। এদিকে গেলো বৈশাখেই প্রকাশ হয় তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘মায়া’। এ অ্যালবামের গানগুলোর সুর করেছেন বেলাল খান। নতুন অ্যালবামের পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে ঐশী বলেন, বৈশাখেই আমার দ্বিতীয় একক প্রকাশ হয়েছে। এখনই নতুন এককের পরিকল্পনা নেই। তবে ভালো কোন প্রজেক্ট হলে অবশ্যই করবো। কারণ ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে চাই সব সময়। আর ‘মায়া’ অ্যালবামটিকেও আরও সময় দিতে চাই। সম্পূর্ণ ফোক ধাঁচের গান নিয়ে এর গানগুলো করেছিলাম। আমার প্রথম অ্যালবামে তেমন কোন ফোক গান ছিলো না। সবই ছিলো আধুনিক। কিন্তু ফোক গানের প্রতি আমার অন্যরকম একটি ভালোলাগা রয়েছে। সেই ভালোলাগা থেকেই ফোক ধাঁচের গান নিয়ে ‘মায়া’ অ্যালবামটি করা। আর টাইটেল গানটির ভিডিও প্রকাশের পর সাধারণ শ্রোতা থেকে শুরু করে অনেক শ্রদ্ধেয় সিনিয়র শিল্পীও প্রশংসা করছেন। এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। বলতে পারেন গানটির জন্য এখনও শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছি। এদিকে মিশ্র অ্যালবামেও ঈদে কয়েকটি গান প্রকাশ পেয়েছে ঐশীর। পাশাপাশি টিভি অনুষ্ঠান নিয়েও ঈদে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এখন নতুন গানের পাশাপাশি স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাকে। তবে ভালো মানের শোগুলোই কেবল করছেন। গান করার পাশাপাশি ঐশী ডাক্তারি পড়ছেন। গান ও পড়াশোনার সমন্বয় কিভাবে করা হয়? ঐশী বলেন, অনেক আগে থেকেই গান ও ডাক্তারি পড়া আমার স্বপ্ন। তাই দুটোকেই সমান প্রাধান্য দিচ্ছি। অনেকের কাছে পড়াশোনা হয়তো খুব কষ্টের বিষয়। তবে আমি পড়াশোনাটাকে খুব উপভোগ করি। বিশেষ করে এখন ডাক্তারি পড়ছি। প্রতিদিনই ক্লাসে নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। অনেক কিছু জানছি। আমার মনে হয় যে বিষয়টি আনন্দের সঙ্গে করা যাবে সেটাই করা উচিত। আর পড়াশোনার বাইরের সময়টা আমি গানে দিচ্ছি। এক্ষেত্রে পরিবারের সাপোর্টটা অনেক। বিশেষ করে বাবা-মার সহযোগিতা ও উৎসাহেই আমি এতটুকু আসতে পেরেছি। সংগীতে অনেকেই আসছেন। আবার অনেকে হারিয়েও যাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় খুব কম সংখ্যক শিল্পীই নিজের জায়গা ধরে রাখতে পারছেন। এ বিষয়টিকে ঐশী কিভাবে দেখেন? উত্তরে তিনি বলেন, এটা কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। আমার মনে হয় সৎ থাকলে যে কোন বিষয়ে সফলতা পাওয়া যায়। তার সঙ্গে চেষ্টা ও ধৈর্যটাও ধারণ করতে হবে। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমি প্রতিদিনই শেখার চেষ্টা করি। জানার ও বোঝার চেষ্টা করি। সবার সহযোগিতায় এভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা এখন কেমন মনে হয়?। এমন প্রশ্নের জবাবে ঐশী বলেন, এখন আসলে সিডি বিক্রি দিন দিন কমছে। তবে অনেক মাধ্যমে এখন গান থেকে আয় আসছে। তা না হলেতো কোম্পানি অ্যালবাম প্রকাশ করতো না। আমার মনে হয় অনলাইনেই গান এখন মানুষ বেশি শোনে। সারা বিশ্বেই তেমন। আমরাও এ ধারায় হয়তো ধীরে ধীরে মানিয়ে নেবো। তবে সব মিলিয়ে অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে।