গ্রাম বংলা ডেস্ক; এক সময় ছিল প্রেম ভালবাসা পবিত্র। লাইলী মজুন ও শিরিন ফরহাদের অলৌকিক প্রেমকে উদাহরণ টেনে মানুষ প্রেম করতেন। তবে এনালগ সময়ে প্রেম পবিত্র ছিল অনেকটাই। ইন্টারনেটের বদৌলতে প্রেমের অর্থ চলে গেছে অন্য দিকে। আধুনিক সময়ে এখন প্রেম ও ভালবাসা চিরস্থায়ী না। অনেকটাই ক্ষনস্থায়ী। প্রেম ভালবাসা এখন অনেকটাই দৌহিক চাহিদার মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। এখনকার নারী পুরুষ প্রেম করে ক্ষনিকের জন্য। কেউ আনন্দ দিতে কেউ নিতে আবার কেউ বা অর্থের প্রয়োজনে দৈহিক মিলনকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন। অনেকে আবার লাভজনক ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে নারীকে পন্য হিসেবে ব্যবহার করছেন। আবার অপরাধ সংঘটনের ঢাল হিসেবেও নারীকে ব্যবহৃত হতে হচ্ছে।
এ সবের কারণ যে শুধুই নারীকে বাধ্য করা হচ্ছে তা নয় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও অভিভাবকদের উদাসীনতাও অনেকটা দায়ী। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্ল্ডে নারীদের জলমলে অবস্থান।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রায় ১৪ জন বিভিন্ন বয়সী নারীর সঙ্গে পরিচয় গোপন করে কথা বলে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরিচয় প্রকাশ না করে ওই সব কথোপকথনের কিছু অংশ তুলে ধরা হল।
৭ম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক মেয়ে জানায়, সে এক বছর আগে থেকেই প্রেম করছে। দশম শ্রনীতে পড়ুয়া মামাত ভাইয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক। প্রায়ই মামাত ভাই তাদের বাসায় আসে। রাতে দুই রুমে থাকা হলেও সকলে ঘুমিয়ে গেলে এক রুমে চলে যায় তারা। উভয়েই ছোট বলে মেয়েটির বাবা মা দু্ইজনকে এক রুমে দেখলেও মনে কিছু করেন না। তাই দুই জনের প্রেম চলছে অনেকটাই নিরাপদে। আর এই প্রেম প্রেম নয় দৈহিক মিলন মাত্র।
মাত্র উচ্চ মাধ্যমিকে উঠা এক মেয়ের প্রেম কাহিনী হল, এসএসসি পরীক্ষার আগে কোচিং করতো কয়েক সহপাটি। একদিন দুই বান্ধবী বাবা মাকে মিথ্যা অজুহাত দিয়ে দুই ছেলে বন্ধুর সঙ্গে চলে যায় একটি রিসোর্টে। সেখানে তারা দৈহিক মিলন সেরে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে। এরপর থেকে ওই ছেলে দুটির সঙ্গে মেয়ে দুটি বিভিন্ন সময় গোপন স্থানে দেখা করতে থাকে। দেখা করার অর্থ হল দৈহিক মিলন।
ইউরোপ কান্ট্রিতে থাকা এক প্রবাসীর স্ত্রী প্রেম করেন। তা কি ধরণের প্রেম এটাও তিনি জানেন না। শুধু এই টুকুই জানেন একটি প্রেম ১৫ দিনের বেশী থাকা উচিত নয়। নিজের বাসায় ডেকে এনে প্রেম। প্রেম মানে দৈনিহ চাহিদা পূরণ। একটি পুরুষের সঙ্গে ১৫ দিনে ২/৩ বার দেখা হলেই প্রেম শেষ। যদি ভাল ও মনের মত কোন পুরুষ পেয়ে যায় ওই নারী তবে প্রেম চলে কয়েক মাস। প্রয়োজনে টাকা বিনিয়োগ করে হলেও ওই নারী কোন কোন প্রেমকে জিইয়ে রাখেন। দেড় বছর ধরে বিদেশে থাকা স্বামীর অবর্তমানে চলছে তার বহুরুপি প্রেম। তবে স্বামী চলে আসলে তার খুচরা প্রেম লাগবে না বলে জানালেও ওই নারী বলেন, স্বামী আসলেও সমস্যা নেই। মন চাইলে আগের যে কোন প্রেমিকের সঙ্গে যে কোন সময়ই দেখা করা যাবে।
স্বামী অফিসে থাকেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। স্বামী যাওয়া-আসার সময় ফোন করে স্ত্রীকে তার অবস্থানও জানায় বিশ্বাস করে। কিন্তু এই বিশ্বাসের অমর্যাদা করে স্ত্রী অনৈতিক মিলনে জড়িয়ে পড়েছেন। এমন এক নারীর ভাষ্য হল, একদিন আমার দুসম্পর্কের এক দেবর বাসায় আসেন রাতের বেলায়। আমার স্বামী তখন বাসায়। পরদিন সকালে স্বামী অফিসে চলে যায়। দেবর বাসায় থেকে যান। এরপর একটি বাসায় আমি আর দেবর ছাড়া আর কেউ নেই। তিনি বলেন, স্বামীকে নাস্তা করিয়ে বিদায় করার পর একটু শুইয়ে ছিলাম। কখন যে ঘুমিয়ে গেছি জানিনা। তবে ঘুমানো অবস্থায় দেবর আমাকে জড়িয়ে ধরেন। আর আমিও একা থাকায় না করিনি। এরপর দিন দেবর চলে যায়। তবে স্বামী চলে যাওয়ার পর আবার দেবরের কথা মনে পড়ে। এই হতাশায় পড়ে আমি পাশের বাসার এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের সঙ্গে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ি। যা এখনো চলছে।
কথা হয়েছে এক স্কুল শিক্ষিকার সঙ্গে। তিনি একটি বেসরকারী স্কুলে শিক্ষকতা করেন। স্বামী ছোট বেতনে চাকুরী করেন। তাই সংসারের প্রয়োজনে তাকে চাকুরী করতে হয়। প্রথম যখন চাকুরী নিলেন তখন তার বেতন ছিল ৩ হাজার টাকা। কিন্তু তার পরে যারা চাকুরী নিলেন তাদের বেতন ৫ হাজার টাকার উপরে উঠে গেলেও তার বেতন ৩ হাজার টাকাই রয়ে গেল। এতে তার মন খারাপ হয়। একদিন প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বৈষম্যের কথা জানালেন। শুনে মুচকি হেসে প্রধান বললেন, প্রতিষ্ঠানের জন্য যারা বেশী লাভজনক তাদের বেতন তো বেশী হবেই। ছাত্র-ছাত্রী ভর্তিতে যাদের দখল বেশী তাদেরতো একটু আলাদা ভাবে দেখতে হয়। তবে অভিযোগকারী শিক্ষিকা বললেন, তিনিও ভর্তির বিষয়ে কাজ করতে চান। তখন প্রতিষ্ঠান প্রধান জানালেন, অনেক শিক্ষিকা আছেন তাই বলে সবাইকে সব সূযোগ দেয়া যায় না। অবশেষে সকল সূযোগ নিয়ে সংসারে সুখ শান্তি প্রতিষ্ঠায় ওই শিক্ষিকা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সব প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। ওই শিক্ষিকা জানালেন, এখন তিনি প্রতি মাসে ১০/১৫ হাজার টাকা আয় করেন। ফলে তার সংসার চলছে স্বাচ্ছন্দে।
স্বামী স্ত্রী দুই জনই দুই জায়গায় চাকুরী করেন। অর্থের প্রয়োজনে দুই জনই অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে গেছেন। তারা বাইরে যা খুশি তাই করেন বাসায় শুধু স্বামী স্ত্রী সেজে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করছেন। এমন ঘটনা অকপটে স্বীকার করেছেন স্বামী-স্ত্রী দুই জনই। তবে কেউ জানেন না যে দুই জনের কথাগুলো একই জায়গায় বলা হচ্ছে।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কিছু জেলায় গোপন জরীপ চালিয়ে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, অনেক জেলা ও মহানগরে একাধিক বাসায় ভদ্রতার আদলে দেহ ব্যবসা চলে আসছে। বিভিন্ন বয়সী নারী ও পুরুষ ওই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। পিছিয়ে নেই ছোট ছোট ছেলে মেয়েরাও। বিশেষ করে টিনএজের ছেলে মেয়েরা যারা আবেগে পড়ে কাজ করে কিন্তু কি কাজ তাও জানে না তারাই যৌনতায় জড়িয়ে পড়ছে। বন্ধু বান্ধবীর জন্মদিন, বিয়ে, পিকনিক, নানা ধরণের নোট আনা, এ সবই অনৈতিক কর্মকান্ডের অজুহাত হয়ে যাচ্ছে। ফলে কোন দাবি অজুহাত হতে যাচ্ছে তা বুঝা এখন অভিভাবকদের জন্য মুশকিল।
একটি উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যে প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য সকল মহলকে সচেতন থাকতে হবে। শিক্ষাকে বাঁধাহীন করে প্রকৃত শিক্ষার আলো যেন ছড়িয়ে পড়তে পারে সে জন্য পরিবার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। না হয় আধুনিকতার ছুঁয়ায় জাতি উন্নতির বদলে ধ্বংস হয়ে যাবে।