ঢাকা : মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া।
আজ মঙ্গলবার (১২ জুলাই) মামলাটির গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে তার পক্ষে সময়ের আবেদন দাখিল করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া।
সময়ের আবেদনের শুনানিতে অসুস্থতার কথা ছাড়া তিনি আরও বলেন, একমাত্র রাষ্ট্রই বাদি হয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে পারে। কোনো ব্যক্তি বাদি হয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে পারেন না। এই মামলাটি আইনসম্মতভাবে দায়ের করা হয়নি এবং এ ব্যাপারে আগামী ধার্য তারিখে একটি আবেদন দাখিল করা হবে।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১০ আগস্ট পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন। বাংলামেইলকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে গত ১ জুন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকার কথা উল্লেখ করে সময়ের আবেদন করা হলে বিচারক ১২ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে গত ২৫ জানুয়ারি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বাদি অ্যাডভোকেট ড. মোমতাজউদ্দিন আহমদ মেহেদী। ওইদিন আদালত খালেদা জিয়াকে হাজির হতে সমন জারি করেন। গত ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া এই মামলাটিতে আদালতে হাজির হয়ে জামিন গ্রহণ করেন।
২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘তিনি তো (বঙ্গবন্ধু) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। শহীদ প্রেসিসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আজকে বলা হয়, এতো (৩০ লাখ) শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও তো অনেক বিতর্ক আছে।
মামলায় বলা হয়, ওই বক্তব্য প্রদানের পরদিন দৈনিক আমাদের সময়সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকায় সবিস্তারে প্রকাশিত হয়। খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ঘোষণাপত্রের পরিপন্থীই নয় দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে বর্তমান সরকারের প্রতি ঘৃণার সঞ্চায় করেছেন। যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। গত ১৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদন অনুযায়ী গত ২১ জানুয়ারি মামলার অনুমতি প্রদান করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।