ঢাকা : জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী হিজবুল মুজাহিদিন গোষ্ঠীর তরুণ নেতা বুরহান মুজাফফর ওয়ানির নিহত হওয়ার পর আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত অধিকৃত এ রাজ্যটি। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানী শ্রীনগরসহ বিভিন্ন অংশে জারি করা হয়েছে কারফিউ।
অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট সেবা। পুলওয়ামা জেলা, তার পাশাপাশি শ্রীনগরের সাতটি থানা এলাকাসহ অনন্তনাগ, শোপিয়ান, পুলগাম ও সোপোর শহরে বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল, ইন্টারনেট।
শুক্রবার দক্ষিণ কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হন জনপ্রিয় ও সুদর্শন এই নেতা। এরই জের ধরে স্থগিত করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী অমরনাথ যাত্রাও। কাশ্মীরের বারামুলা থেকে জম্মুর বানিহাল পর্যন্ত রেল সেবাও তুলে নেয়া হয়েছে।
এদিকে বুরহান নিহত হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গোটা কাশ্মীর জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষেরও খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে শ্রীনগরসহ বেশকিছু এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে রাজ্যের মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা।
শনিবার রাজ্যের সকল স্কুলে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থগিত রাখা হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অমরনাথ তীর্থ যাত্রা।
অন্যদিকে বুরহান হত্যার প্রতিবাদে শনিবার গোটা রাজ্যে হরতালের ডাক দিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি।
২২ বছরের বুরহান ওয়ানি ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের একজন। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ রুপি পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল ভারত সরকার। যদিও এই জঙ্গি নেতা অস্ত্র হাতে কখনোই লড়াই করেননি। তার অস্ত্র ছিল সামাজিক মাধ্যম। তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারণা চালাতেন। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই তিনি কাশ্মীরের তরুণ শ্রেণির আইডল হয়ে ওঠেন। তার দেখাদেখি সাম্প্রতিক সময়ে অনেক যুবক বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল।
শুক্রবার বিকেলে অনন্তনাগ জেলার কোকেরনাগ এলাকায় ভারতীয় সেনাদের গুলিতে দুই সহযোগীসহ নিহত হন কাশ্মীরের জনপ্রিয় এই তরুণ নেতা। তার নিহত হওয়ার ঘটনাকে সেনাবাহিনীর ‘বড় ধরনের সফলতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।