গ্রাম বাংলা ডেস্ক: কাজী আবদুল হাসিব মোহাম্মদ সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ। ছবিটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তোলা। ছবি: জুয়েল শীলচট্টগ্রামে কাজী আবদুল হাসিব মোহাম্মদ সাঈদ (৪৭) নামের একজন বিচারকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই নারী তাঁকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে ওই দুই নারী—লাকী আক্তার ও তাঁর মেয়ে সানজিদা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। আটক সানজিদা নিজেকে বিচারক সাঈদের স্ত্রী দাবি করে বলেছেন, সাঈদ আত্মহত্যা করেছেন। তবে তাঁদের কর্থাবার্তা অসংলগ্ন বলে মনে করছে পুলিশ।
সাঈদ নওগাঁয় অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এস এম তানভীর আরাফাত হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুই নারী সন্ধ্যায় তাঁকে মৃত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। তাঁরা দাবি করেন, হালিশহরের মোল্লাপাড়ায় তাঁদের বাসায় অবস্থানের সময় সাঈদ আত্মহত্যা করেছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বিচারকের মাথায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।
অতিরিক্ত উপকমিশনার (পশ্চিম) আরাফাত বলেন, এটি রহস্যজনক মৃত্যু। সাঈদের গলায় ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পরে ময়নাতদন্ত করা হবে।
হাসপাতালে আটক সানজিদা প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, গত জুন মাসে তাঁকে বিয়ে করেন সাঈদ। গত শুক্রবার মোল্লাপাড়ায় তাঁদের বাসায় আসেন তিনি। আজ সেখানেই আত্মহত্যা করেন। কিন্তু কীভাবে আত্মহত্যা করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলার আগেই পুলিশ তাঁদের গণমাধ্যমের কর্মীদের সামনে থেকে সরিয়ে নেয়।
নিজেকে বিচারকের স্ত্রী বলে পরিচয় দিলেও সানজিদা বা তাঁর মা লাকি আক্তারকে কোনো রকম কান্নাকাটি করতে দেখা যায়নি। তাঁদের এ সময় নিরুদ্বিগ্ন দেখা গেছে।
এদিকে বিচারকের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান চট্টগ্রাম আদালতের বিভিন্ন বিচারকেরা। চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম মশিউর রহমান চৌধুরীও যান হাসপাতালে।
কয়েকজন বিচারক প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে দুই নারী বিচারককে হত্যা করেছে। তিনি বিয়ে করেছেন বলে তাঁরা শোনেননি। বিচারক পরিবার নিয়ে নওগাঁয় থাকেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
এদিকে হাসপাতালে বিচারকের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম আদালতের বেশ কয়েকজন বিচারক ও আইনজীবী উপস্থিত থাকলেও তাঁরা মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানাতে পারেননি।