জাপানের পোশাক খাতের ব্র্যান্ড ইউনিকলো বাংলাদেশে সফরে স্থগিত করেছে। কেবল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেই শিথিল থাকবে এই স্থগিতাদেশ। বাংলাদেশে নিয়োজিত এই ব্র্যান্ডের কর্মীদের নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করতেও বলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে তাদের শোরুমগুলোতে যথারীতি কার্যক্রম পরিচালিত হবে। শুক্রবার রাতে ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ৭ জন জাপানি নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে এমন অবস্থান নিয়েছে ইউনিকলোর মূল কোম্পানি ফাস্ট রিটেইলিং। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ঢাকার ওই সন্ত্রাসী হামলার পর বাংলাদেশের ২,৬০০ কোটি ডলারের গার্মেন্ট শিল্পখাতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জাপানের ইউনিকলো থেকে শুরু করে মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার বা গ্যাপ ইনকরপোররশনের মতো বড় বড় গার্মেন্ট রিটেইলাররা বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে জাপানের ইউনিকলোর ১০ জন কর্মী বাংলাদেশে নিয়োজিত রয়েছেন। চীনের বাইরের অন্যতম বৃহৎ এই পোশাক নির্মাতা কোম্পানিই প্রথম বাংলাদেশে ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করলো। গত বছরে বিদেশিদের ওপর হামলার পর থেকেই অবশ্য বাংলাদেশে ভ্রমণে বিধিনিষেধ জারি করেছিল ইউনিকলো। প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ ব্যতীত বাংলাদেশে সব ধরনের ভ্রমণ স্থগিত করা হয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পখাতের বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ইউনিকলোর মতো ব্র্যান্ডগুলো হয়তো এখন বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম সরিয়ে নেয়ার বিবেচনা করতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা কম্বোডিয়া থেকে শ্রীলঙ্কার মতো কোনো দেশকে বেছে নিতে পারে যেখানে অস্থিতিশীলতার মাত্রা কম। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। সুইডেনের এইচঅ্যান্ডএম রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমাদের পোশাক উৎপাদনের স্থান পরিবর্তন নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’ অন্যান্য রিটেইলার কোম্পানিও প্রায় একই সুরে কথা বলছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অর্থনীতি গার্মেন্ট খাতের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে এই খাত থেকে। প্রায় ৪০ লাখ কর্মসংস্থান রয়েছে এই খাতে। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানিতে চীনের পরেই অবস্থান বাংলাদেশের।