সাতক্ষীরা : এবার ইসকন মন্দিরের পুরোহিত ভবসিন্ধুকে (৫২) পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত তিনটার দিকে সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর রাধা গোবিন্দ ইসকন মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রাত তিনটার দিকে মন্দির এলাকার পাহারাদার ও গ্রাম পুলিশের দুজন সদস্যকে বেঁধে রেখে পুরোহিত ভবসিন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে চার/পাঁচজন দুর্বৃত্ত মন্দিরে ঢুকে ব্যাপক মারপিট করে।
খবর পেয়ে সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত পুরোহিতকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স ম শহীদুল ইসলাম ও সদর থানার ওসি ইমদাদুল হক শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ জুন ঝিনাইদহের সদর উপজেলার করাতিপাড়া শ্মশানঘাট এলাকায় পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলীকে (৬৫) গলাকেটে হত্যা করেছিল দুর্বৃত্তরা। ওইদিন সকালের দিকে বাইসাইকেলে করে পুরোহিত আনন্দ গোপাল একটি মন্দিরে পূজা দিতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তিনি নলডাঙ্গা ইউনিয়নের মহিষা ভাগাড় নামক স্থানে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত তার গতি রোধ করে। প্রথমে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। লাঠির আঘাতে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তার গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পুলিশ জানিয়েছে, পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী হত্যার সঙ্গে সেবায়েত শ্যামানন্দ দাস হত্যার মিল রয়েছে।
এছাড়া গত শুক্রবার (০১ জুলাই) ফের ঝিনাইদহে মন্দিরের এক সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত শ্যামানন্দ দাস ওরফে বাবাজি (৫৫) সদর উপজেলার উত্তর কাষ্টসাগরা গ্রামের শ্রী শ্রী রাধামদন গোপাল মঠের সেবায়েত। নিহত শ্যামানন্দ দাস বাবাজি নড়াইল সদর উপজেলার মুসুড়িয়া গ্রামের কিরণ দাসের ছেলে।
এর আগে ৫ জুন সকালে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় সুনীল গোমেজ নামে এক খ্রিস্টান দোকানিকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত সুনীল গোমেজ খ্রিস্টানপল্লির যোসেফ গোমজের ছেলে।
গত ১৫ জুন বিশেষ অভিযানের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামি স্টেটের (আইএস) নামে চিঠি পাঠিয়ে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনের এক গুরুকে ধর্মপ্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চাপাতিতে কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।
চিঠিতে ওই ধর্মগুরুর উদ্দেশে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ একটি ইসলামী রাষ্ট্র, এখানে ধর্মপ্রচার করতে পারবি না। ধর্মপ্রচার করা হলে ২০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে তোকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হবে।’ তবে কোন মাসের ২০ থেকে ৩০ তারিখ সে বিষয়ে চিঠিতে কিছু উল্লেখ ছিল না।
সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে হিন্দু পুরোহিত হত্যাকাণ্ডের পর আইএস কিংবা আল কায়দা দায় স্বীকার করলেও জঙ্গি দল দুটির অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে।