পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউরোপিয়ান কমিশনার লর্ড হিল। ইইউ ত্যাগের পক্ষে গণভোটের ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যা হয়ে গেছে, তা আর পাল্টানো যাবে না।’ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইইউর আর্থিক সেবার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার হিসেবে কাজ চালিয়ে যাওয়াটা সমীচীন হবে না বলেই তার বিশ্বাস। তবে সুশৃঙ্খলভাবে দায়িত্বভার হস্তান্তর নিশ্চিতের জন্য কয়েক সপ্তাহ তিনি এ পদে থাকবেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি অনলাইন। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেছেন, তিনি ‘অনেক আফসোস নিয়ে’ লর্ড হিলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। লর্ড হিলকে ‘সত্যিকার ইউরোপিয়ান’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, যিনি নিজেও গণভোটের ফলাফলের পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন, তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন লর্ড হিল। গণভোটের পূর্বে ক্যামেরনের মতো তিনিও বৃটিশ জনগণকে ইইউতে রয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। লর্ড হিলের পদত্যাগের পর তার স্থলাভিষিক্ত হবেন লাটভিয়ান রাজনীতিক ভালদিস ডোম্ব্রোভস্কিস। তিনি বর্তমানে ইউরো বিষয়ক ইউরোপিয়ান কমিশনার।
বৃহসপতিবার ইইউ ত্যাগের পক্ষে গণভোটের ফলাফল আসার পর ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৃটেনকে দ্রুত প্রস্থানের প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। এর কিছু সময় পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন লর্ড হিল।
ব্রাসেলসে ইইউর সদরদপ্তরে সবচেয়ে ক্ষমতাধর কর্মকর্তাদের মধ্যে ইউরোপিয়ান কমিশনাররা অন্যতম। বিভিন্ন নীতিগত বিষয়ে আইন তৈরি করার এখতিয়ার রয়েছে তাদের। কিন্তু ইইউ ত্যাগ করায় এ সুবিধা আর পাবে না যুক্তরাজ্য।
নিজের বিবৃতিতে কনজারভেটিভ নেতা লর্ড হিল বলেন, গণভোটের ফলাফল নিয়ে তিনি ‘খুবই হতাশ’। তিনি যোগ করেন, ‘আমি চেয়েছিলাম আমার প্রস্থান ভিন্নভাবে হোক। আশা করেছিলাম যে, অগ্রসরমান, নমনীয়, প্রতিযোগিতামূলক মুক্ত বাণিজ্যের ইউরোপের পক্ষে থাকতে চাইবে বৃটেন। কিন্তু বৃটিশ জনগণ ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবং এভাবেই গণতন্ত্র কাজ করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি ব্রাসেলসে এসেছিলাম এমন একজন হিসেবে, যে কিনা ইউরো মুদ্রায় বৃটেনের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছিল এবং ইউরোপ নিয়ে সংশয়বাদীদের কাতারে ছিল। এখন আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, হতাশা সত্ত্বেও ইইউতে আমাদের সদস্যপদ, দুনিয়ায় আমাদের অবস্থান ও আমাদের অর্থনীতির জন্য ভালো ছিল।’ তিনি বলেন, ‘কিছুই ঘটেনি, এমন ভান করে’ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়াটা ভালো মনে করেননি তিনি।