জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবিলায় ব্লেম গেম না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিরোধী দলের ওপর মিথ্যা দোষ না দিয়ে জঙ্গিবাদ ও গুপ্তহত্যা মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতার প্রয়োজন। পাশাপাশি দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনলে সব সমস্যার সমাধান হবে। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন শেষে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সেই সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশনকে আইএসয়ের সামপ্রতিক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বিএনপির তরফে একাত্মতা ও প্রকাশের ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে খালেদা জিয়ার নির্দেশে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল রামকৃষ্ণ মিশনে যান। সেখানে প্রতিনিধি দলটির মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দজী মহারাজের সঙ্গে আধাঘণ্টাব্যাপী কথা বলেন। পরে ড. মোশাররফ বলেন, সমপ্রতি রামকৃষ্ণ মিশনকে চিঠি দিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন যেহেতু একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান, সেহেতু দেশের জনগণ বিশেষ করে হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকজন এতে অত্যন্ত চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন। বিষয়টি উপলব্ধি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে মিশনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে আমরা এখানে এসেছি। আমরা এ হুমকির ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দজী মহারাজের সঙ্গে কথা বলেছি। সরকারে থাকতে এবং এখনও আমরা যে রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে আছি, সেটা তাকে অবহিত করেছি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির প্রবীণ এ নেতা বলেন, আমরা এখানে আসায় স্বামীজী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেবল রামকৃষ্ণ মিশন নয়, যেখানেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমাদের দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি গেছে। তাদেরকে সমবেদনা জানিয়েছে। ড. মোশাররফ বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীগোষ্ঠী কিছু লোককে টার্গেট করে হত্যা করছে। সরকার বিরোধী দল দমনে ব্যস্ত থাকায় জঙ্গিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তারা একের পর এক মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে। আসলে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার অবৈধ। যার কারণে দেশে গণতন্ত্র নেই। আর গণতন্ত্র না থাকায় দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সৃষ্টি এবং উত্থান ঘটছে। তিনি বলেন, প্রতিটি ঘটনায় সরকার কোন তদন্ত না করেই বিরোধী দলের ওপর দোষ দিচ্ছে। এভাবেই কোন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেই সরকার ব্লেম গেম শুরু করে দেয়। নিজেদের ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নদিকে সরাতে প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে বিএনপির ওপর এর দায় চাপায়। এ থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সব সময় আমাদের অবস্থান। সুতরাং সামপ্রতিককালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে বিএনপি কোনোভাবেই জড়িত নয়। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-আইন সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডুু, যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি তরুণ দে, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নেতা তপন কুমার বসু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সঞ্জীব কুমার দেব জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।