মীর কাসেমের রিভিউ শুনানি ২৫ জুলাই

Slider বাংলার আদালত

2016_06_07_17_32_50_j3iQFSgPyOoElLVQ6nT0AykN7cb2RM_original

 

 

 

 

ঢাকা : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের ওপর শুনানির দিন আগামী ২৫ জুলাই ধার্য করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদনের শুনানি দ্রুত করার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ দিন নির্ধারণ করেন।

এর আগে এর আগে গত ১৯ জুন ৬৮ পৃষ্ঠার এক আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে ফাঁসির দণ্ড থেকে অব্যাহতি চেয়ে এ রিভিউ আবেদন করেছেন মীর কাসেম আলীর আইনজীবীরা। সেই রিভিউ আবেদনের দ্রুত শুনানির জন্য আজ (মঙ্গলবার)  আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

গত ৬ জুন দুই শত ৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ পায়। রিভিউ নিষ্পত্তি ও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, নিয়ম অনুযায়ী এ দুটি আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তার দণ্ড কার্যকর করার উদ্যোগ নেবে সরকার।

পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা তিনবার কাশিমপুর কারাগারে মীর কাসেম আলীর নিয়মিত দেখা করেছেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, নিয়ম অনুযায়ী মীর কাসেম আলী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ করবেন। রিভিউ করার পর দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।

৬ জুন দুপুরে রায় প্রকাশের পর সুপ্রিম কোর্ট থেকে রয়ের অনুলিপি বিচারিক আদালত (ট্রাইব্যুনালে) পাঠানো হয়। পরে ওই দিন সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে ট্রাইব্যুনাল থেকে মীর কাসেম আলীর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন বিচারকরা। লাল কাপড়ে মুড়িয়ে পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিসি অফিস তথা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের এর কাছে পাঠানো হয়।

এর পরের দিন ৭ জুন মঙ্গলবার সকালে কাশেমপুর কারাগারে পার্ট-২ এ মীর কাসেম আলীকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ এবং মৃত্যু পরোয়ানা জারির বিষয়ে জানানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর আপিল খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ।

আপিলের রায়ে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদকে খুনের দায়ে এক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ছয় অভিযোগে ৫৮ বছর কারাদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে হত্যার দায় থেকে এই জামায়াত নেতা অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রাখা হয়েছে।

২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দুই অভিযোগে মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড এবং আট অভিযোগে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও এই ব্যবসায়ীকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার বিচার। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাশেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে মীর কাসেমের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রাখা হয়েছে।

মীর কাসেম আলী ষষ্ঠ ব্যক্তি, যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। এর আগে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *