একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত ইসলামীর নেতা মীর কাসেমকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা কারাগারে আনা হয় মীর কাশেমকে। তাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।
সোমবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে মীর কাসেমকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয় বলে জানান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক ।
মীর কাসেমকে কেন ঢাকায় আনা হয়েছে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেলসুপার জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এখন থেকে তাকে এখানেই রাখা হবে।’
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গত ৮ মার্চ আপিলের রায়েও সেই সাজা বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য কাসেমের আইনজীবীরা রোববার সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন। রিভিউ না টিকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন মীর কাসেম। সে প্রার্থনা নাকচ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয় জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য কাসেমকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার।
এ মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ ৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেমকে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানের খান সেনাদের সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হওয়া ‘বাঙালি খান’ হিসাবে, যিনি সে সময় জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে গঠিত সশস্ত্র আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান, তা উঠে এসেছে এই রায়ে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অর্থাৎ মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। তিনি হলেন জামায়াতের পঞ্চম শীর্ষ নেতা, চূড়ান্ত রায়েও যার সর্বোচ্চ সাজার সিদ্ধান্ত এসেছে।