লালমনিরহাট: পলাতক জঙ্গি ও দেশের অভ্যন্তরে অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে লালমনিরহাটের সীমান্ত এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার (১৮ জুন) সন্ধা থেকে জেলার ১৪৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বিশেষ ওই সতর্কতাবস্থা জারি করা হয়। এর অংশ হিসেবে পাটগ্রাম পৌর শহরের উপশহর বাইপাস চৌরাস্তা মোড়, বুড়িমারী জিরোপয়েন্ট, দহগ্রাম বিওপিসহ অন্যান্য র্স্পশকাতর স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছে বিজিবি।
প্রশাসনের উচ্চ মহলের নির্দেশে এসব চেকপোস্টে গাড়ি চেকিংসহ লোকজনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পুরস্কার ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের পলাতক ৬ জঙ্গির মধ্যে দুই সদস্য পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন খবরের ভিত্তিতে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর করের নেতৃত্বে বিভিন্ন জায়গায় কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়। কিন্তু গোপন সংবাদ সোর্সের মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সেই অভিযান ব্যর্থ হয়। সে কারণে জঙ্গিদের ধরতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের সহকারী দারোগা সাইদুল ইসলাম জানান, ইমিগ্রেশনে পলাতক ৬ জঙ্গি সদস্য শরিফ, সেলিম, সিফাত, রাজু, সিহাব ও সাজ্জাদের পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো তথ্য কিংবা আদেশ দেয়া হয়নি।
পুলিশ ও বিজিবি সূত্রমতে, জঙ্গি সদস্যরা ভারত-বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলে সীমান্তে আত্মগোপন করে থাকে। সুযোগ বুঝে এক সময় তারা ভারতে পাড়ি দেয়। বর্তমানে জঙ্গি পারাপারে দু-দেশের সীমান্ত বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ সর্বদা সর্তক অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে, সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে বিজিবির কড়াকড়ি পাহারা দেখে তিনবিঘা করিডোর, চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে আগের চেয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সীমান্ত পয়েছে দুইজনের স্থলে ৪জন আর চারজনের স্থলে ৮জন বিএসএফ সদস্যকে টহল দিতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট ১৫-বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল আহম্মেদ বজলুর রহমান হায়াতী বাংলামেইলকে জানান, লালমনিরহাট জেলার সীমান্ত জুড়ে বিজিবিকে সার্বক্ষণিক সর্তক রাখা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ টহল। অপরাধীদের ধরতে পুরো সীমান্ত জুড়ে শনিবার সন্ধা থেকে জারি করা হয়েছে রের্ড অ্যালার্ট। যাতে দেশের অভ্যন্তরে অপকর্ম করে সীমান্ত পেরিয়ে অপরাধীরা পার পেয়ে না যায়।
প্রসঙ্গত, ধারাবাহিক গুপ্তহত্যা আর জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাতে। এ অভিযানে পুলিশের হিসাবে আটক হয়েছে ১৯৪ জন জঙ্গি। নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, লেখক- প্রকাশক-ব্লগার হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের ৬ সদস্যকে ধরতে গত ১০ মে ছবি প্রকাশ ও পুরস্কার ঘোষণা করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার থাকা বাংলা টিমের কয়েকজন সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই ৬জনকে শনাক্ত করা হয়। ডিএমপির অফিসিয়াল সাইটে প্রকাশ হওয়ার ছবির ব্যক্তিরা হচ্ছেন- শরীফ, সেলিম, সিফাত, রাজু, সিহাব ও সাজ্জাদ। এদের ধরিয়ে দিলে বা তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে, ২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পুলিশ।