আর মাত্র চারদিন বাকি। এরপরই বৃহস্পতিবার ২৩শে জুন বৃটেন ইউরোপিয় ইউনিয়নের সঙ্গেই থাকবে কিনা সে বিষয়ে গণভোট। একে ব্রেক্সিট নাম দেয়া হয়েছে। কিন্তু লেবার দলের এমপি জো কক্সকে হত্যায় স্তম্ভিত বৃটেন। ব্রেক্সিটের পক্ষ বিপক্ষ প্রচারণা থামিয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে বিপুল সংখ্যক মানুষ জো কক্সকে হত্যাকা-ের পর ওই গণভোট বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে আবেদন করেছে। এই আবেদন এখন জোরালো হয়েছে। তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, গণভোট থেকে পিছু ফেরার কোন সুযোগ নেই। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, গণভোট বাতিল করতে বৃটিশ পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে শনিবার চালু করা আবেদনে স্বাক্ষর করেছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। প্রথম বাধা অতিক্রমের জন্য এ আবেদনে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষের স্বাক্ষর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সে সংখ্যা পেরিয়ে ২০ হাজার অতিক্রম করেছে। যে গতিতে স্বাক্ষরকারীর সংখ্যা বাড়ছে সে হিসেবে বৃহস্পতিবার গণভোটের আগে এ সংখ্যা এক লাখে পৌঁছবে। এমন হলে স্বাধারণত পার্লামেন্টে বিতর্ক হয়ে থাকে। কিন্তু আবেদন এমপিদের কানে পৌঁছাবে বলে মনে হয় না। কারণ, তারা গণভোট নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। ফলে তারা বিতর্কে যাবেন বলে মনে হয় না। এমপি জো কক্সের মৃত্যুর ঘটনায় তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্ট অধিবেশন বসছে। কিন্তু এতে পিটিশন কমিটি ওই আবেদন আমলে নেবেন বলে মনে হচ্ছে না। ওই আবেদনে বলা হয়েছে, বৃটেন একটি পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রের দেশ। এই পার্লামেন্টকেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বৃটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কিনা। বিবিসির মতে, প্রধানমন্ত্রীর সমঝোতায় নেয়া সংস্কার প্যাকেজের ভিত্তিতে বৃটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নেই থাকার জন্য সব দলের ৪৪৪ জন এমপি তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। এসব কথা বলা হয়েছে ওই আবেদনে। জবাবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, বৃহস্পতিবারের গণভোট বাতিল করা হবে একটি বড় বুল। এতে এক দশক ধরে এক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে। তিনি আরও বলেছেন, বৃহস্পতিবারের গণভোট আদতে গণতন্ত্রই, জো কক্স যারা পক্ষে ছিলেন। উল্লেখ্য, ডেভিড ক্যামেরন ইউরোপিয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি সানডে টেলিগ্রাফে লিখেছেন, জো কক্স বৃটেনের জন্য তার সেরা প্রচেষ্টা রেখে গেছেন, যে দেশ শালীন ও দয়াশীল। অপরিহার্য এই গণভোট এক চরম মুহূর্তে। এতে নির্ধারণ হবে, আমরা কেমন দেশ চাই। তিনি লিখেছেন, আমরা কি নাইজেল ফারাজের দৃষ্টিভঙ্গি বেছে নিতে যাচ্ছি, যা বৃটেনকে পিছনে নিয়ে যাবে, একতার পরিবর্তে বিভক্তি সৃষ্টি করবে। কেউ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলে তার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তিনি আরও লিখেছেন, নাকি এর পরিবর্তে আমরা একটি সহনশীল, উদার বৃটেনের পক্ষে অবস্থান নেব। এটা হবে সেই দেশ যেখানে এর সমস্যাগুলোর জন্য অন্য মানুষদের দায়ী করা যাবে না। এমন একটি দেশ হবে যা তার অতীতের জন্য নিস্তেজ হয়ে পড়বে না। বরং প্রত্যাশা, আশা ও আস্থা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে। আমি মনে করি অনেক দিন ধরে আমার দেশ যেমনটা মনে করছে তা থেকেই বেরিয়ে আসবে উত্তর। ওদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন চ্যান্সেলর জর্জ অসবর্ন। তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে ভোট দেয়া হলে তা হবে সবচেয়ে ভয়াবহ ভুল।