গ্রাম বাংলা ডেস্ক: মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ দেওয়া হবে এবং তাঁদের সনদ বাতিল করা হবে।
বৃহস্পতিবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ কথা বলেন।
সেলিনা বেগমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে মুক্তিযোদ্ধা এক লাখ ৮৭ হাজার ৫৯৬। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ৪৫ হাজারের বেশি মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছেন। ধারণা করা হয়, এঁদের বেশির ভাগই ভুয়া। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নতুন করে করা হবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। উপজেলা পর্যায় থেকে এ কাজ শুরু করা হবে। সাংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের দায়িত্বে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করা হবে। ভুয়া কেউ যাতে তালিকায় ঢুকতে না পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেলিনা বেগমের নির্ধারিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ গ্রহণ করে সুবিধা গ্রহণকারীদের সনদ ও গেজেট বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) প্রতিবেদনের সুপারিশে এখন পর্যন্ত ১৮২ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েও যাঁদের নাম গেজেটভুক্ত হয়নি, তাঁদের গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। এসব আবেদন যাচাই করে গেজেটভুক্ত করা হবে।
নুরজাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়া সাপেক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর প্রধানদের দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে বিচার শুরু করা হবে। ভবিষ্যতে রাজাকার, আলবদর ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের উপজেলাভিত্তিক তালিকা করার সম্ভাবনা আছে।
আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো, ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত নারীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও তালিকা তৈরির বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।
ইতিহাস বিকৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া–সম্পর্কিত আমাতুল কিবরিয়ার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, এঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেই। খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষী ও জিয়াউর রহমান ইতিহাস বিকৃতি করেছিলেন। ইতিহাসে তাঁদের স্থান যেখানে হয়েছে, এখন যাঁরা ইতিহাস বিকৃতি করছেন, তাঁদের স্থানও সেখানে হবে।
ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, যাঁরা ভুয়া সনদ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। তাঁরা অবৈধভাবে যেসব রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, আশা করি মামলার রায়ের মাধ্যমে তা আদায় করা সম্ভব হবে।
দুদকের সুপারিশের আলোকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদধারী সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, পীর ফজলুর রহমানের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বুধবার চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কোনো পদমর্যাদা বিবেচনা করা হবে না। সকল ভুয়া সনদ বাতিল করা হবে। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।’