একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে টেলিভিশন দেখেন-এমন নারীদের ৬৬ শতাংশের বেশি অধিকাংশ সময় ভারতীয় টিভি চ্যানেল দেখেন। চ্যানেলগুলোর শীর্ষে রয়েছে স্টার জলসা। বাংলাদেশের ৫৮ শতাংশ নারী দর্শক নিয়মিত এই চ্যানেলটি দেখেন।
সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও আচরণ পরিবর্তন কর্মসূচির প্রভাব যাচাই-বিষয়ক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ওই জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়। জরিপটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ।
জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৯০ শতাংশ নারী টেলিভিশন দেখে। এদের ৫৮ দশমিক ২ শতাংশ অধিকাংশ সময় ভারতীয় চ্যানেল স্টার জলসা দেখে, ৬ দশমিক ৬ শতাংশ জি বাংলা এবং ১ দশমিক ৮ শতাংশ দেখে স্টার প্লাস চ্যানেল। রাষ্ট্রীয় চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন নারীরা বেশি দেখে। এই হার ১৯ দশমিক ১ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় জরিপে সাতটি বিভাগের গ্রাম ও শহরের পাঁচ হাজার ৭৭ জন নারীর কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৪৯ বছর। এ ছাড়া ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ৬৭০ জন অবিবাহিত কিশোরীর তথ্যও সংগ্রহ করা হয়। এ বছর মে থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বিয়ের বয়স, প্রজনন স্বাস্থ্য, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা, পুষ্টি এবং কিশোরী স্বাস্থ্যের ওপর তথ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও আচরণ পরিবর্তন কর্মসূচি কী প্রভাব ফেলেছে তা যাচাই করা ছিল এই জরিপের উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে জরিপের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের ৮৯ দশমিক ৮ শতাংশ নারী টেলিভিশন দেখে। বস্তিতে এই হার ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ। রেডিও শোনে দেশের ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। সংবাদপত্র ও সাময়িকী পড়ে ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ নারী। জরিপে দেখা গেছে দেশের নারীরা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার তথ্য ও জ্ঞান লাভ করে মূলত টেলিভিশন ও পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মীদের নানা প্রচার কাজ থেকে। সেই তুলনায় সংবাদপত্রের ভূমিকা কম।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির প্রভাব মোট প্রজনন হার বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর কতটুকু পড়েছে জরিপে তা যাচাই করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পদ সীমিত। সেই সম্পদ যৌক্তিকভাবে ব্যবহার করা উচিত।’
জরিপের প্রেক্ষাপট তুলে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের চেয়ারপারসন মো. আমিনুল হক ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন।