কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। একই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে আগামী ২০শে জুন বিকাল ৩টায় সংগঠনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান ও কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করেন জোট নেতারা।
জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সোহেলের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (একাংশ)’র রাশেদ শাহরিয়ার, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাদেকুল ইসলাম সোহেল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাবি শাখার সভাপতি ইভা মজুমদার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা।
এসময় তিনি বলেন, গত ১২ই জুন তনু হত্যার দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকরা এই রিপোর্টেও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারে নি। রিপোর্টে ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সে’র প্রমাণ পেলেও তা ধর্ষণ কি না স্পষ্ট করে বলা হয়নি। আর এই রিপোর্টের মাধ্যমে আরও বিভ্রান্তি তৈরি করা হল এবং কালক্ষেপণের মাধ্যমে আরও একটি অপরাধকে বিচারহীনতার দিকে ঠেলে দেওয়া হল। তাই আমরা এই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করছি।
সম্প্রতি দেশব্যাপী ব্যাপক ধড়পাকড়ের বিষয়ে মাসুদ রানা বলেন, সারাদেশের প্রত্যকটি মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সর্ম্পকে সুনির্দিষ্ট তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে’ সাম্প্রতিক সময়ে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের রেশ ধরে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের নামে সুনির্দিষ্ অপরাধীদের ধরার বদলে জনজীবনে গণগ্রেপ্তারের আতংক ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই গণগ্রেপ্তারের শিকার হয়েছে সাড়ে আট হাজারের বেশি মানুষ। আর এদিকে গুম-খুন-ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
সবচেয়ে নিরাপদ বলয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কিন্তু এখনও দোষীদের সনাক্ত করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষায় ধর্ষণের স্পষ্ট আলামত এবং ধর্ষণে তিন জনের যুক্ততার কথা স্বীকার করেছিল সিআইডি। তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইলও পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে। অথচ ময়নাতদন্তে যেভাবে মন্তব্য করা হয়েছে তা শুধু মিথ্যাচার নয়, মৃত তনুর পক্ষে জনগনের সহানুভূতি নষ্ট করার অপচেষ্টা। পুরো বিষয়টিকে এখন ‘ধর্ষণ হয়েছে কি না’ এই বির্তকে আটকে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু বিচারের কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।