ঢাকা: রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় ৪১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য আগামি ১৮ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (১৩ জুন) মামলাটির অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষে শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করলে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান তা মঞ্জুর করে নতুন করে এ দিন ধার্য করেন।
এ সময় সোহেল রানার জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক তা নামঞ্জুর করেন।
শুনানির সময় সোহেল রানাসহ কারাগারে থাকা ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা ২৩ আসামিও আদালতে হাজির হন।
এ মামলার এখানো ১২ আসামি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- সাভার পৌরসভার সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাভার পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাক্টর, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, ইথার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, নয়ন মিয়া ও মো. ইউসুফ আলী।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে নয়তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়লে ১৩শ ৩৬ জন মারা যান। আহত হন ১৫শ’ ২৪ জন।
ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনায় সময় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ। এছাড়া ইমারত বিধি মেনে রানা প্লাজা নির্মাণ করা হয়নি- এমন অভিযোগে রানাসহ ১৩ জনকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করেন রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল আহমেদ।
মামলা দুটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ১ জুন রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা দু’টি মামলায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে পৃথক দু’টি চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র এএসপি বিজয় কৃষ্ণ কর।
হত্যা মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও তার বাবা-মাসহ ৪১ জনকে ও ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় ১৮ জনকে আসামি হয়েছেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক ও মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার মেয়র রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী, মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইথার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাক্টর, মো. আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী ও তসলিম।
হত্যা মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ভবনে ফাটল থাকায় যেকোনো সময় তা ধসে মৃত্যু হতে পারে জেনেও ওইদিন শ্রমিকদের বাধ্য করা হয়েছিল ভবনে প্রবেশ করতে। আর তারই ফলশ্রুতিতে ভবন ধসে শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছে।