চাঁদা না দেওয়ায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক ছাত্রীর বাবা পাঁচ তরুণকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ দেন। আদালতের নির্দেশে গতকাল শনিবার রাতে পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করে। আজ রোববার ওই দুই কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে দুই ছাত্রীর ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করায় তাঁদের পরিবারে নেমে এসেছে বিপর্যয়। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় ওই দুই ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
নির্যাতিত দুই ছাত্রীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে ওই দুই কিশোরী তাঁদের এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যায়। বেড়াতে যাওয়ার পথে ওই এলাকার পাঁচ বখাটে তরুণ তাঁদের পিছু নেয়। একপর্যায়ে তারা দুই ছাত্রীকে তুলে একটি ভুট্টাখেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করা হয়। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ওই দুই কিশোরীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় তাঁরা। এ ঘটনার পর নির্যাতিত কিশোরীর অভিভাবকেরা ধর্ষণকারীদের পরিবারকে জানালে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য সতর্ক করে দেন। ধর্ষকেরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং মানসম্মানের ভয়ে এ নিয়ে তেমন একটা উচ্চবাচ্য করতে সাহস পায়নি দুই ছাত্রীর পরিবার। মাস খানেক আগে ধর্ষকেরা দুই ছাত্রীর বাবার কাছে এক লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বখাটে তরুণেরা। দরিদ্র পরিবারটি টাকা দিতে না পারায় অবশেষে ধর্ষকেরা এক সপ্তাহ আগে দুই তরুণীকে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়।
এ ঘটনায় ১ জুন নির্যাতিত এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ করেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. বজলুর রহমান অভিযোগটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে গণ্য করে তদন্ত করা এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর জন্য চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চরভদ্রাসন থানার ওসি রাম প্রসাদ ভক্ত বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।