স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর থেকে ফিরে: গাজীপুর সিটিকরপোরেশনে (জিসিসি) যে কোন টাকা উত্তোলন করতে হলে ১০% কমিশন দিতে হয়। এই ১০% টাকা বৈধ না অবৈধ এই আলোচনার আগে এই অংকটা যে ভাবে উপস্থাপিত হয় এতে মনে হয় টাকাটা বৈধ। যে কোন সময় জিসিসি থেকে টাকা নিতে গেলে ওই ১০% টাকা বাদ দিয়েই হিসেব করতে হয়।
গোপন সূত্র বলছে, গাজীপুর সিটিকরপোরেশন থেকে যত টাকা দেয়া হয় তার মধ্যে ১০% দিয়ে আসতে হয়। এই পারসেন্টিজ নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। সবাই জানেন, এই ১০% কমিশনের টাকা সরকারী হয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিটিকরপোরেশনের মাধ্যমে সরকারী ও আন্তর্জাতিক তহবিলের কোটি কোটি টাকার কাজ করা হচ্ছে। এই সকল কাজ ঠিকাদারদের মাধ্যমেই করা হয়। আর ওই সকল কাজের টাকা নেয়ার সময় ১০% টাকা কমিশন দিয়ে যেতে হয়। ঠিকাদারী কাজের টাকা ছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, ক্লাব সমিতি বা সকল ধরণের অনুদান গ্রহকারী প্রতিষ্ঠানকেও ওই টাকাটা দিতে হয়। সূত্র বলছে, এমন কিছু প্রকল্প আছে যার ক্ষেত্রে ১০% হয়ে যায় ৫০% থেকে ৬০%। জিসিসির প্রদান কৃত টাকার কমিশন থেকে যে টাকা পাওয়া যায় তার পরিমান দাঁড়ায় বছরে ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এই ১০% টাকার মধ্যে আগে কাউন্সিলরদের কিছু কিছু টাকা হঠাৎ হঠাৎ দেয়া হত। এখন আর তা দেয়া হয় না। সিটিকরপোরেশনের মেয়র পদটি টিকিয়ে রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ ওই টাকা খরচ করেন। এ ছাড়া সিটিকরপোরেশনকে সরকারী বেসরকারী নজরদারী থেকে আাঁড়ালে রাখতেও নানামুখী খরচ করতে হয় তাকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অনুদানটা দিতে হয় ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে। সারা বছর বিভিন্ন জাতীয় দিবস, ক্লাব, সমিতির অনুষ্ঠানে চাাঁদা দেয়ার দাতার মধ্যে কিরণ সাহেব সবচেয়ে বড় দাতা হিসেবে পরিচিত। আওয়ামীলীগের যে কোন নেতার যে কোন চাহিদা পূরন করতে সময় নেন না কিরণ। কারণ আওয়ামীলীগ বেঁকে বসলে মেয়রের চেয়ার হারানোর সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। তাই ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ ক্ষমতাসীন দলের সকল চাহিদা পূরন করছেন ওই কথিত ১০% থেকেই।
সরেজমিন নগর ভবনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন গনমাধ্যম কর্মী পরিচয়ে বেশ কিছু সাংবাদিক নগর ভবনে অবস্থান করেন। তারা সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে দালালি, ঠিকাদারী ও নগর ভবনকে সব ধরণে ঝামেলামুক্ত রাখতে কাজ করছেন। কোন টেন্ডার হলে ওই সাংবাদিকেরা ছবি তোলে জনগনকে টেন্ডারে কোন অনিয়ম হয়নি মর্মে আস্বস্থ করেন।
এ ছাড়া নগর ভবন কর্তৃপক্ষ যে কোন অনুষ্ঠানে যাতে সাংবাদিক না যায় তাই গোপনে গোপনে কতিপয় সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। কোন অনুষ্ঠানের প্রেসবিজ্ঞপ্তি যার যার মেইলে পাঠিয়ে দেন। যদি কোন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের শোভা বর্ধন প্রয়োজন হয় তবে যে সকল সাংবাদিক ভারপ্রাপ্ত মেয়রের আস্থাভাজন শুধু তাদেরকেই জানানো হয়, যেন কেউ জবাবদিহিমুলক প্রশ্ন করতে না পারেন। বর্তমানে দুই বিএনপি নেতা কাম সাংবাদিক নগর ভবনে মিডিয়া নিয়ন্ত্রনের দায়িত্বে রয়েছেন।
(নগর ভবনে সাংবাদিকদের দালালী নিয়ে আলাদা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হবে। )