ঢাকা: নাটোরের চাঞ্চল্যকর স্বাধীন হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত এক আসামিকে খালাস ও অপর আসামির দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।
এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম চৌধুরী। অপরদিকে পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মমতাজ বেগম শুনানি করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, নাটোর শহরের উত্তর তেবাড়ীয়া এলাকার জুমাউল রাব্বানী তালুকদার ওরফে স্বাধীন এর সঙ্গে মীর মাহবুবুর রহমান ওরফে রনিক, শহিদুল ইসলাম ও শৈলেশ কুমার রায় ওরফে কালু অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ধান-চালের ব্যবসার করতেন।
এক পর্যায়ে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ২০০১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রনিক টাকা দেয়ার জন্য স্বাধীনকে ডেকে পাঠায়। ওইদিন বিকেল থেকে স্বাধীন হয় নিখোঁজ।
স্বজনদের সন্দেহ হওয়ায় রনিককে আটক করে তারা পুলিশে সোপর্দ করে। তার বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করা হয়। পরে রনিকের দেয়া তথ্যমতে, ঘটনার ৯ দিন পর ২ অক্টোবর বিকেলে শহরের বড়গাছা এলাকায় বদিউজ্জামানের ধানের চাতালের পাশে মাটিতে পুঁতে রাখা স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের চাচা আবদুস ছালাম তালুকদার বাদি হয়ে চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ২০০২ সালের ৩১ জুলাই চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার দেবনাথ একজনের ফাঁসি, দু’জনের যাবজ্জীবন ও একজন বেকসুর খালাস দেন।
এর মধ্যে বগুড়ার সোনাতলা থানার মধ্য দিগলকান্দি গ্রামের ডা. সুধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে শৈলেশ কুমার রায় কালুর ফাঁসি(পলাতক), নাটোর শহরের দক্ষিণ বড়গাছা এলাকার মীর আনিছুর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান রনিক এবং সিংড়া থানার বড় মাঝগ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে শহিদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন জেল দেয়া হয়। অপর আসামি উজ্জ্বল হোসেন বেকসুর খালাস পান।
পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) এর জন্য এবং আসামিদের জেল আপিলের পর এ মামলাটি হাইকোর্টে আসে।
শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শুনানি শেষে হাইকোর্ট শহীদুল ইসলামকে খালাস এবং শৈলেশ কুমার রায় কালু এবং রনিককে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন।
আদালতে শহীদুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও রনিকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক।