ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনে ‘সন্তোষ প্রকাশ’ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে প্রতিবেদন জমা দিতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের (এসপি) ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) করা সময়ের আবেদনও মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছে আগামী ৭ আগস্ট।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার নতুন এই দিন ধার্য করেন।
আদালতের জারি করা রুলের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে প্রশাসনের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে অসন্তোষ প্রকাশ করে এটাকে দায়সারা বলেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৮ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন নতুন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী জেলা প্রশাসন থেকে বুধবার তাদের নতুন প্রতিবেদন দাখিল করে।
আর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দিতে দুই মাস (৬০) দিন সময় চান। তাদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ঘটনায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় নতুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া সম্ভব নয়।
প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন ও পুলিশের সময় আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে হাইকোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত জেলা প্রশাসনের নতুন তদন্ত প্রতিবেদনে সন্তোষ প্রকাশ করে। একইসঙ্গে পুলিশকে নতুন প্রতিবেদন দাখিলে ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেয়া হয়। এরপর ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
গত ১৪ মে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ করে মারধর করা হলে তিনি আহত হন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে তাকে কান ধরে উঠ-বস করানো হয়।
এ ঘটনায় ১৮ মে নারায়ণগঞ্জে স্কুল শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করার ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই ঘটনায় কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা সংশ্লিষ্টদের ৩ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়।
সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসিন রশিদ পত্রিকায় প্রকাশিত শিক্ষকের কান ধরে উঠবস করার ঘটনায় প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। এরপর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।
সেই রুলের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। প্রশাসনের দাখিল করা তিনটি প্রতিবেদনকে দায়সারা গোছের উল্লেখ করে পুনরায় এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।