গ্রাম বাংলা ডেস্ক: দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় বরেণ্য সিনিয়র আইনজীবীদের সমন্বয়ে সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আহ্বায়ক করা হয়েছে সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনকে। কমিটির নাম দেয়া হয়েছে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংরক্ষণ কমিটি’। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবনের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা শেষে এই কমিটি গঠন করা হয়। এ সময় উপস্থিত সকল আইনজীবী এই কমিটিকে সমর্থন জানান।
কমিটির অন্যরা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে সহসদস্য সচিব করা হয়েছে।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দিতে ইতোমধ্যে সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। সংসদে উত্থাপনের পর বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এমন সংশোধনী আনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই দেশের আইনজীবীদের একটি বিরাট অংশ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এর বিরোধিতা করে আসছে। এর অংশ হিসাবেই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি আজ সুপ্রিম কোর্টে ‘স্বাধীন বিচার বিভাগ; বিচারক নিয়োগ পদ্ধতি, বিচারকের দায়বদ্ধতা ও অভিশংসন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। এই আলোচনায় আরো অংশ নেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ড. শাহদীন মালিক, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। শুরুতে আলোচনার বিষয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী। সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
আলোচনা শেষে সভাপতির অনুমতি নিয়ে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় সর্বদলীয় কমিটির নাম প্রস্তাব করেন। এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট সবাই এবং অডিটরিয়ামে উপস্থিত সকলে এই কমিটিকে সমর্থন জানান। তবে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এটি একটি প্রাথমিক কমিটি। ভবিষ্যতে আলোচনার ভিত্তিতে এর সদস্য সংখ্যা বাড়তে পারে।
সভায় ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংসদে কোনো আইন পাস হলেও তা অসাংবিধানিক হতে পারে। ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনী সংসদেই পাস হয়েছিলো। পরে এটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ওই পার্লামেন্টও একটি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছিলো। তিনি বলেন, আমাদের কথা সংবিধানের পক্ষে। এটা দেশের সর্বোচ্চ আইন। এই আইন সবাই মানতে বাধ্য। দেশ সংবিধানের নিয়ন্ত্রণে চলতে হবে। সংসদে মেজরিটি হলেও আপনাকে সংবিধান মোতাবেক চলতে হবে। কারণ, মেজরিটিও অসাংবিধানিক হতে পারে।