পবিত্র রমজানে রোজা রাখার বিষয়ে সিনজিয়াংয়ে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে চীন। মধ্য সিনজিয়াংয়ের কোরলা শহরের সরকারি ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি নোটিশ পোস্ট করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, অবশ্যই রমজানে দলীয় সদস্য, ক্যাডার, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, ছাত্রছাত্রী ও সংখ্যালঘুরা রোজা রাখতে পারবেন না। তারা অবশ্যই কোন ধর্মীয় কর্মকাণ্ডেও অংশ নিতে পারবেন না। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, সোমবারে সেখানে পবিত্র রমজান শুরু হয়েছে। কিন্তু সরকারি এমন বিধিনিষেধের কারণে মুসলিম অধ্যুষিত ওই এলাকার মানুষ রোজা রাখতে পারছেন কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। দেশটিতে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবেই নাস্তিক। অনেক বছর ধরে সিনজিয়াংয়ে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সংখ্যালঘুদের রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এই সিনজিয়াংয়ে বসবাস করেন এক কোটির বেশি মুসলিম। তারা উইঘুর সম্প্রদায় বলে পরিচিত। শুধু তাদেরকে রোজা রাখতেই নিষিদ্ধ করা হয় নি, একই সঙ্গে হোটেলগুলো খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ অঞ্চলে মাঝে মাঝেই উইঘুর সম্প্রদায় ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই অঞ্চলের স্বাধীনতা দাবি করছে এমন জঙ্গিদের এসব হামলার জন্য দায়ী করছে বেইজিং। উইঘুর সম্প্রদায় ও চীনের বিভিন্ন এলাকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চাপিয়ে দেয়া ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞাকে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। সিনজিয়াংয়ের বেশ কিছু স্থানীয় সরকার বিভাগের ওয়েবসাইটে নোটিশ পোস্ট করা হয়েছে গত সপ্তাহে। তাতে রমজানে রোজা রাখার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। শহরের তিকেকি টাউনশিপে উইঘুর এক কর্মকর্তা, আহমাদজান তোহকি গত সপ্তাহের সোমবার বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের উচিত রমজান মাসে অবশ্যই দলীয় সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, ছাত্রছাত্রী ও সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় কর্মকা- চালানো বন্ধ করা। শুইমোগোউ জেলার শিক্ষা বিষয়ক ব্যুরো পরিচালিত একটি ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি নোটিশে সোমবার বলা হয়েছে, রমজানে সব স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের ধর্মীয় কর্মকা- চালানো বন্ধ করা উচিত। রাষ্ট্র পরিচালিত চায়না এথনিসিটিজ রিলিজিয়নের ওয়েবসাইটে শুক্রবার একটি পোস্ট দেয়া হয়েছে। তাতে হয়, আলতে শহরের কর্মকর্তারা একমত হয়েছেন অভিভাবকদের সঙ্গে তারা সম্পর্ক আরও জোরালো করবেন। তাদেরকে তারা রমজানে রোজা রাখা বন্ধ করায় পদক্ষেপ নেবেন। সিনজিয়াংয়ের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাপকাল সিবে অটোনোমাস কাউন্টি সরকারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ওই এলাকার রেস্তোরাগুলোকে রমজানে দিনের বেলায় খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হবে, যাতে লোকজন স্বাভাবিক খাবার খেতে পারে। ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের দিলসাত রাসিত সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এতে তিনি বলেন, চীন মনে করছে ইসলাম উইঘুরে ইসলাম বিশ্বাসীরা বেইজিংয়ের নেতৃত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।