ইসি’র শেষ পরীক্ষা আজ

Slider জাতীয়

16900_f3

 

 

 

চলমান ইউপি নির্বাচনের শেষ ধাপের নির্বাচন আজ। আলোচনা-সমালোচনায় নাস্তানাবুদ কমিশনের শেষ পরীক্ষা। ধাপে ধাপে প্রাণহানি ও সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সব মহল থেকে। এমন প্রেক্ষিতে আজ ইউনিয়ন পরিষদের শেষ ধাপের ৭২৩টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে এই ভোটগ্রহণ। গতকাল কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ সকল নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। মধ্যরাতে শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। এ ধাপে ভোটের আগেই আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৮ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন। এছাড়া ৬৯ ইউপিতে প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। ইসি কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশে ৪,৫৪৬টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে এ বছর মেয়াদ শেষ হয়েছে ৪,২৭৫টির। গত ১১ই ফেব্রুয়ারি ছয়টি ধাপে ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া এসব ইউপির তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন জটিলতায় ১৬৬টি ইউপির নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। সর্বশেষ ষষ্ঠ ধাপের ৭২৩টি ইউপিসহ মোট ৪,১০৯টি ইউপির ভোট হচ্ছে এবার। তবে শেষ মুহূর্তে এই সংখ্যাটিও কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তরা। ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনকে ঘিরেও বিভিন্ন স্থানে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর এবং প্রচারে বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়া শেষ মুহূর্তে হামলা, ভাঙচুর-সহিংসতার অসংখ্য অভিযোগ ইসিতে জমেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন ও যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শক্ত ভূমিকা নেয়ার কথা মুখে বললেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি ইসিকে। নির্বাচন কমিশন নির্বিঘ্ন পরিবেশের আশ্বাস দিলেও আজ ভোট গ্রহণের দিনেও ব্যাপক সহিংসতা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে পঞ্চম ধাপের রেকর্ড সহিংসতায় ইসির নিশ্চুপ ভূমিকায় এই শঙ্কা আরো বেড়ে গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট মহল। নির্বাচন কমিশনও শেষ ধাপের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে নির্বাচনী এলাকায় মাঠে টহলে রয়েছে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসারসহ প্রায় দুই লাখের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও অপরাধ তদারকিতে মাঠে রয়েছেন। উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ড, অন্য সকল এলাকায় বিজিবি রয়েছে। প্রতি ইউনিয়নে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসার সমন্বয়ে একটি করে মোবাইল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ মানবজমিনকে বলেন, ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনা হয়েছে। সব বিষয়ে সজাগ রয়েছি আমরা। কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করে, গোলযোগের চেষ্টা না করে। দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে মাঠ কর্মকর্তাদেরও নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি আগের পাঁচ ধাপের তুলনায় এই ধাপের নির্বাচন আরো সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিতই মাঠপর্যায়ের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিচ্ছি। আগের অভিজ্ঞতা থেকে গোলযোগ হতে পারে, এমন সব এলাকায় প্রশাসন ও পুলিশকে বিশেষ তদারকিরও তাগাদা দিয়েছি। এখন সবার সহযোগিতা পেলে আরো ভালো ভোট হবে। ভোটারদের জন্য নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে দ্রুত ফলাফল পাঠাতে রিটার্নিং অফিসারদের বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি ফলাফল ঘোষণা ও পরবর্তী সময়ে যাতে সহিংসতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
নির্বাচনের কারণে ৭২৩টি ইউপিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ফলে নির্বাচনী এলাকায় সকল অফিস বন্ধ থাকবে। নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের সাধারণ যান চলাচলও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে এক নির্দেশনায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *