১০ জুন ফ্রান্সে শুরু হচ্ছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ। মহাদেশীয় এ ফুটবল লড়াইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারটি আলোচনায় রয়েছে। এবার সে শঙ্কার কথা খেলোখুলিই বললেন পর্তুগালের কোচ ফারনানদো সান্তোস। তিনি মনে করেন টুর্নামেন্ট চলাকালে সন্ত্রাসী হামলার সবচেয়ে বেশি শঙ্কায় থাকবে পর্তুগাল ফুটবল দল। এর পেছনের কারণ, ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো’। এবারের ইউরোতে খেলা খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় তারকা রিয়াল মাদ্রিদের এ পর্তুগিজ উইঙ্গার। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সন্ত্রাসীরা এই দলটির ওপর হামলা করে বেশি আলোচনায় থাকার চেষ্টা করবে বলে মনে করেন পর্তুগালের কোচ। বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে সন্ত্রাসী হামলার শঙ্কায় থাকা দেশ ফ্রান্স। গত নভেম্বরেও দেশটিতে সিরিজ হামলা চালায় আইএস সন্ত্রাসীরা। এতে ১৩০ ব্যক্তি নিহত হন। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে ফ্রান্সকে এবারের ইউরোপার আয়োজক হওয়া থেকে সরে আসার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু বাড়তি নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর প্রতি সন্ত্রাসীদের টার্গেটের ভিন্ন কারণও রয়েছে। গত মাসে ইসরাইলের একটি মোবাইল অপারেটরের বিজ্ঞাপনে কাজ করে সমালোচিত হন তিনি। আর ইদানিং কেন যেন রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকদের টার্গেট করে হামলা করছে আইএস সন্ত্রাসীরা। ২০১৫-১৬-ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল খেলে রিয়াল মাদ্রিদ। ফাইনালের কয়েকদিন আগে ইরাকের আইএস সন্ত্রাসীরা দেশটির রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকদের জড়ো হওয়া একটি ক্যাফেতে হামলা চালায়। এতে নিহত হন ১৪ রিয়াল সমর্থক। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জেতে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ শিরোপাটি উৎসর্গ করেন ইরাকে নিহত ওই রিয়াল সমর্থকদের প্রতি। ফাইনালের দিন ইরাকে ফের রিয়ালের সমর্থকদের আরেক ক্যাফেতে আইএস সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এবার নিহত হন ১২ রিয়াল সমর্থক। সব মিলিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার শঙ্কা বিভিন্নভাবে জেগে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে পর্তুগালের কোচ ফারনানদো সান্তোস বলেন, ‘সবাই জানেন, রোনালদোর উপস্থিতির কারণে পর্তুগাল দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার শঙ্কা অনেক বেশি। তবে আমরা এ জন্য প্রস্তুত।’ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের মূল লড়াই শুরু হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে পর্তুগাল। রোনলদোহীন পর্তুগাল ম্যাচটি হারে ১-০ গোলে। ওই ম্যাচের পর এমন শঙ্কার কথা জানান পর্তুগালের কোচ। তিনি আরও বলেন, ‘টুর্নামেন্টে খেলা প্রতিটি দলের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব ফ্রান্সের নিরাপত্তারক্ষাকারী কর্মীদের। আমাদের সমর্থকরা অনেক সময় খেলোয়াড়দের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তারা নিশ্চয় জানেন, আমাদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সেটা করতে পারি না। দলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো খেলোয়াড় থাকায় সন্ত্রাসী হামলার শঙ্কা অনেক বেশি। তারা এমন জনপ্রিয় ও পরিচিত খেলোয়াড়দের ওপর হামলা করে বেশি আলোচনায় আসতে চাইবে।’ ইউরোপায় ‘এফ’ গ্রুপে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ আইসল্যান্ড, অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি। ১৪ জুন পর্তুগালের প্রথম ম্যাচ আইসল্যান্ডের বিপক্ষে।