গ্রাম বাংলা ডেস্ক: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজশাহী-৪ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হককে আজ সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অতিরিক্ত ও অবৈধ সম্পদ নেই দাবি করে এই সাংসদ দুদককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।
আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে অভিযোগের বিষয়ে এনামুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক যতন কুমার রায়।
পরে দুদকের এই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে সাংসদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে তিনি পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছেন, তাঁর যথেষ্ট বেশি সম্পদ রয়েছে।’
দুপুরের দিকে দুদক কার্যালয়ের নিচে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে এনামুল হক দাবি করেন, তাঁর কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি সফল ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে রাজনীতিতে এসেছি।’
রাজশাহী-৪ আসনের এই সাংসদ দাবি করেন, ‘এ পর্যন্ত আমার যে সম্পদ হয়েছে, তার সবটাই ব্যবসা থেকে অর্জিত। আমার সম্পদ বাড়তেই পারে। কিন্তু পাঁচ বছরে অস্বাভাবিকভাবে বাড়েনি।’
দুদককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হক বলেন, ‘আমি দুদকে আমার সম্পদের সঠিক হিসাব দিয়েছি। ইসিতে (নির্বাচন কমিশন) জমা দেওয়া হলফনামা ও দুদকে দেওয়া সম্পদের হিসাব—দুটোই এক ও সঠিক। এর বাইরে আমার কোনো সম্পদ নেই। এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।’
নবম জাতীয় সংসদের ছয় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর হলফনামা নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ৭০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-সাংসদের হলফনামা ও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া অস্বাভাবিক সম্পদের তথ্য থেকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, সাংসদ আসলামুল হক, এনামুল হক ও আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁদের সঙ্গে বিএনপির দুই সাবেক সাংসদ শহীদউদ্দিন চৌধুরী ও মশিউর রহমান এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসের বিরুদ্ধেও প্রাথমিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
সাংসদ এনামুল হক ২০০৮ সালে বেতন-ভাতা থেকে আয় করেন ২০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর পরে কৃষি, বাড়ি ও দোকান ভাড়া, ব্যবসা ও পেশা থেকে বছরে তাঁর আয় হয় ৫০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে তাঁর স্ত্রীর ২ কোটি ৮৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে।