আগামী ১০-১১ জুলাই অনুষ্ঠেয় দলের জাতীয় সম্মেলনের মঞ্চ ও প্রধান ফটকের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রীকে দেখানোর জন্য মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপপরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সদস্য সচিব মির্জা আজমের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা গত সোমবার রাতে গণভবনে গেলে এ বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। ঘটনা জেনে নেতারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা গণভবনে এসে আমার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন; কিন্তু ওই সময়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের চোখে পড়েনি।’ প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর উপস্থিত নেতারা হতভম্ব হয়ে পড়েন।
ওই সময়ে নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এসএম কামাল হোসেন, ঝালকাঠি-১ আসনের এমপি বজলুল হক হারুন, ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী এবং এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ।
কূটনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণে এবারকার জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী এক ভিন্নতর উচ্চতায় উন্নীত হয়েছেন। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা কেবল রাষ্ট্র পরিচালনার দিক থেকে নয়, আন্তর্জাতিক ভূমিকা, উন্নয়ন ভাবনা ও আদর্শিক বিবেচনায়ও বিশ্ব নেতৃত্বের কাতারে উন্নীত হয়েছেন। সম্মেলনে তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য এই সম্মেলন কূটনৈতিক দিক থেকে সফল হিসেবে বিবেচিত ও আলোচিত হচ্ছে।
এ কারণে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর ওই দিনই রাতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা গণভবনে গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় তাদের সঙ্গে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাও বিনিময় করেছেন। তবে ওই সময় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে শুধু আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি ও কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের অন্য কেউ ছিলেন না। কোনো মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি সবার কাছেই কম-বেশি দৃষ্টিকটু ছিল।
সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি বৈঠক জুনের প্রথমার্ধে :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে দলের জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি এ সময় দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেন।
দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ জানিয়েছেন, জুনের প্রথমার্ধে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আগামী ৯ থেকে ১১ জুনের মধ্যে এ বৈঠক হতে পারে। এতে জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা, অর্থ, ঘোষণাপত্র, দপ্তর, গঠনতন্ত্র, প্রচার ও প্রকাশনা, স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা, মঞ্চ ও সাজসজ্জা, সাংস্কৃতিক, খাদ্য এবং স্বাস্থ্য উপ-পরিষদ নেতারা বেশ কিছু প্রস্তাব তৈরি করেছেন। প্রস্তাবগুলো নিয়েও কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনার প্রস্তুতি রয়েছে।