রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতার আদলে নির্মাণ করা এ ছবির গল্পে দেখানো হয়েছে, সুদীপা (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) ও উজান (প্রসেনজিৎ চট্টপাধ্যায়) সুখী দম্পতি। সেই আনন্দের মাঝেই শুরু হয় তাদের দাম্পত্য কলহ এবং বিচ্ছেদ। সংসার জীবনের ইতি টানার অনেক বছর পর আবার ট্রেনের একটি কামরায় দেখা হয় দু’জনের। তারপর…
গল্পে আরও রয়েছে এক বর্ষীয়ান দম্পতির সম্পর্ক, যারা আজও নিজেদের আঁকড়ে রয়েছেন অবলীলায়, আঁকড়ে থাকার অভ্যাসে। অন্য দিকে সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি, যাদের সম্পর্ক সবে শুরু হচ্ছে একরাশ স্বপ্ন আর ভাললাগা নিয়ে।
সদ্য বিবাহিত দম্পতির চরিত্রে বিশ্বনাথ আর মানালি গল্পের গুমোট বাঁধা বাস্তবের মধ্যে একটু স্বস্তির সুযোগ এনে দেবে। স্বস্তি মিলবে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জুটির অংশতেও। ওদের দু’জনকে দেখে মন তৃপ্তিতে ভরে উঠবে।
ভাল লাগবে চার ‘গানওয়ালা’ বন্ধুদেরও। ‘ভূমি’র সুরজিৎ, ‘চন্দ্রবিন্দু’র অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় আর উপল সেনগুপ্ত এবং সঙ্গে অনুপম রায়। গল্পে এদের নাম পাল্টায়নি। অকারণ অভিনয়েরও দরকার পড়েনি তাই।
কিন্তু, সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন মালিনীর চরিত্রে অপরাজিতা আঢ্য। তার সাবলীল অভিনয় আপনাকেও ওই ট্রেনেরই একজন যাত্রী করে তুলবে। আসলে অপরাজিতা হয়তো অভিনয়ই করেননি। তিনি হারিয়ে গিয়েছেন মালিনীর চরিত্রেই। তাই ছবির পর্দা জুড়ে সৌমিত্র-সাবিত্রী, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা থাকা সত্ত্বেও বার বার সবার নজর কেড়েছেন অপরাজিতা আঢ্য। কিন্তু ‘প্রাক্তন’-এর পোস্টারে কোথাও নেই তিনি। প্রচারের আলো কেন যে তার উপর কোনও ভাবেই পড়ল না তা বুঝলাম না।
অপরাজিতা ছাড়াও মালিনী-উজানের মেয়ে পুতুলের চরিত্রে ছোট্ট অভীপ্সা বসাক নজর কেড়েছে সকলের।
তাই গানে-গল্পে জমজমাট হয়ে উঠেছে ‘প্রাক্তন’।