ভালবাসার আবরণে অপরাধ এখন রীতিমত বানিজ্যের হাতিয়ার হয়ে গেছে। এই শব্দ ব্যবহার করে চলছে আমাদের জীবন। সব চেয়ে দু:খজনক ঘটনা হল, যারা আমাদের দেশ পরিচালনা করেন তারা ওই শব্দের অপপ্রয়োগ করেন। আর এই অপপ্রয়োগের ফলে বাংলা শব্দটি ব্যবহৃত হচ্ছে অপরাধ সংঘটনের ঢাল হিসেবে যা তার ব্যাকরণীক অর্থকে হারিয়ে দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক ফলাফল বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, ভালবাসা শব্দটি এখন অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বাস নির্ভর এই শব্দটি এখন অবিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ মানুষকে প্রতারণা করতে চাইলে এখন ভালবাসার উপর নির্ভর করছেন। এই ভালবাসার অপপ্রয়োগ যারা রোধ করবেন তারাও ভালবাসার উপর ভর করে প্রতারণা করছেন। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তারা ভালবাসার প্রলোভন দেখিয়ে সহজ সরল মানুষতে বোকা বানাচ্ছেন। মানুষের বিশ্বাসকে ছিনতাই করছেন। বিশ্বাসী বনে গিয়ে কাজ শেষে বিশ্বাসের অমর্যাদা করছেন। অনেক সময় বিশ্বাসের ভীত ভেঙ্গে চূরমার করছেন। রাষ্ট্রযন্ত্র বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রতারণা করার ফলে রাষ্ট্রের মালিক জনগন হতাশা আর অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন। এই হতাশার মাত্রার গতিবেগ এত বাড়ছে যে, বিশ্বাস করে সব হারানোর ভয় তাড়া করে ফিরছে।
পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, ইতিপূর্বে বা এখন যারা দেশ পরিচালনা করেছেন বা করছেন তারা সকলেই জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। রাষ্টযন্ত্র প্রতারণায় ব্যবহৃত হওয়ার ফলে মানুষ অনেকটা আশাহত হচ্ছেন। এতে অবশ্য হতভাগা মানুষের অভিশাপ দেয়া ছাড়া আর কিছুই থাকেনা।
লক্ষ্য করলে দেয়া যায়, দেশ ও জনগনের সেবা করার দায়িত্ব যারা পালন করেন তারা নিজেদের সেবায় বেশী ব্যস্ত হয়ে উঠছেন। ভালবাসার আবরণে তারা প্রতারণা করে মানুষ ও দেশের জন্য কাজ না করে নিজেদের উন্নয়নের কাজ করছেন। রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন না করে তারা ব্যাক্তিগত উন্নয়নের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন বেশী। ফলে মানুষ ও দেশ এখন হতাশ। এতে ভালবাসার উপর নির্ভর আমাদের গনতন্ত্র এখন স্বৈরতন্ত্রের দিকে ধাবিত।
অনেকে বলছেন, ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও দেশ ও মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ রাজনৈতিক দল গুলো ভালবাসার আবরণে জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করাকে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত করে ফেলছেন। আর যুগের পর যুগ ওই রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি চর্চা হতে থাকবেই। ফলে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন ভালবাসার প্রতারণা হবেই। এই থেকে মুক্তির জন্য ভালবাসা প্রকৃত অর্থে ব্যবহারের দাবিতে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।
ড. এ কে েএম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম