পালিয়ে গেলো হত্যা মামলার আসামি, অর্ডার মানেনি পুলিশ!

Slider জাতীয়

Mymensingh-map20160524070311

 

 

 

 

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে ট্রেন থেকে লাফিয়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামির পালিয়ে যাবার ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের অসতর্কতাকেই দায়ী করেছে ময়মনসিংহ পুলিশ।

অভিযোগ রয়েছে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বন্দি আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম-নীতিরও কোনো তোয়াক্কা করেনি ওই পুলিশ সদস্যরা।

প্রিজন ভ্যান সঙ্কটের কারণে বাসে চেপে আসামিদের নিয়ে আসার আদেশ থাকলেও সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় কেন ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে তাদের আনা হচ্ছিল এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তাই নয়, ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে দাগি ওই আসামিসহ আরেক আসামিকে ময়মনসিংহে আনতে ৪ জন পুলিশ সদস্যের থাকার কথা থাকলেও দায়িত্বে ছিলেন মাত্র ৩ জন।

সোমবার (২৩ মে) দিনগত রাত সোয়া ১২ টার দিকে ত্রিশাল থানা পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে এসব তথ্য উঠে আসে।

এদিকে, দুর্ধর্ষ আসামি পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ।

অন্য দুই সদস্য হলেন গফরগাঁও সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বিল্লাল হোসেন ও ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান। কমিটিকে মঙ্গলবারের (২৪ মে) মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আসামিকে গ্রেফতার করতে সম্ভাব্য ত্রিশাল ও গফরগাঁওয়ে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের দু’টি দল।

জানা যায়, জেলার ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ফারুক ওরফে খোরশেদ (৪০) ঢাকা জিআরপি থানার একটি হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ত্রিশাল উপজেলার একটি হত্যা মামলার আসামিও তিনি।

** ডান্ডাবেরী নিয়েই পালালো হত্যা মামলার আসামি!

সোমবার (২৩ মে) রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে এবং মাদক মামলার আসামি শাহীনকে (৩০) কমিউটার ট্রেনে ময়মনসিংহে আনা হচ্ছিলো।

শৌচাগারে যাবার কথা বলে রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহ-ঢাকা রেলপথের ত্রিশালের ধলা রেলস্টেশনের পাশে জামতলা এলাকায় ট্রেন থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায় খোরশেদ। এসময় তার পায়ে ডান্ডাবেরী ও হাতে হ্যান্ডকাপ ছিলো- জানান রাজারবাগ পুলিশ লাইনের নায়েক শাহ আলম।

সূত্র জানায়, প্রিজন ভ্যান সঙ্কটের কারণে বাসে এই দু’আসামিকে ময়মনসিংহে নিয়ে আসার আদেশ ছিলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের। এজন্য তাদের পরিবহন খরচও দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু টাকা বাঁচাতেই বাসের পরিবর্তে আসামিদের ট্রেনে আনেন ওই নায়েকসহ পুলিশ সদস্যরা- এমনটি ময়মনসিংহ কারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন শাহ আলম।

আরও জানা যায়, দুই আসামিকে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে নায়েক শাহ আলম এবং তিন পুলিশ কনস্টেবলকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও উপস্থিত ছিলেন মাত্র তিন পুলিশ সদস্য। মাদক মামলার অন্য আসামিকে কারাগারে পৌঁছে দেওয়ার সময় নায়েক শাহ আলমের সঙ্গে ছিলেন মাত্র একজন পুলিশ কনস্টেবল।

দায়িত্বে অবহেলার কারণেই দাগি আসামি পালিয়ে গেছে বলে মনে করেন ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার হাবিবুর রহমান।

ডান্ডাবেরী ও হ্যান্ডকাপ পড়া অবস্থায় একজন আসামি ট্রেন থেকে লাফিয়ে পালালো কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, ‘হয়তো ওই আসামির পায়ে ডান্ডাবেরী ও হাতে হ্যান্ডকাপ ছিলো না। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা নিজেদের বাঁচাতেই এমন দাবি করে থাকতে পারেন’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *