বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন, সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত বলে তাদের ধরা হয় না। আওয়ামী লীগের আমলে কোনো ধর্মের মানুষ নিরাপদ নয়।
আজ শনিবার রাতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া এসব অভিযোগ করেন। গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বর্তমানে দেশে কোনো ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নেই। যত লোক হত্যা হয়েছে, একটাও কি ধরা পড়েছে? একটাও ধরা পড়েনি। তার কারণটা হলো, এরা সব তাদের দলীয় লোক।’
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, আওয়ামী লীগ মুখে ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বললেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। তারা ধর্ম নিরপেক্ষতা বিশ্বাস করে না। তাই যদি হতো তাহলে সব ধর্মের মানুষকে হত্যা করত না। তাদের মনে যে কি আছে তা জানা কঠিন। আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কোনো ধর্মের মানুষ নিরাপদ নয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, তিনি (শেখ মুজিব) দেশের স্বাধীনতা চাননি, চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে। খালেদা জিয়া দাবি করেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আর মুক্তিযুদ্ধ করেছিল সাধারণ মানুষ।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগেও অনেক ভালো মানুষ আছে। তারা সরকারের সব সিদ্ধান্ত মানতে পারেন না, কিন্তু মুখে প্রকাশ করেন না।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, কোনো দল থাকবে না, তারা একলাই থাকবে—এটাই আওয়ামী লীগের নীতি। দেশে এখন গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই মামলা, জেলে নিয়ে নির্যাতন শুরু হয়ে যায়। পাশাপাশি তিনি নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারেরও কঠোর সমালোচনা করেন। সিইসিকে বোবা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলছেন, নির্বাচন করতে গেলে ট্যাংক লাগবে। এতদিনে তিনি বুঝেছেন ট্যাংক লাগবে। সে জন্যেই বিএনপি বলেছে, এই স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হলেও জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তাহলে সেখানে সেনাবাহিনী ট্যাংক চালাতে পারবে।
আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, মারামারিতে নয়, আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান সম্ভব।
অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, ধর্ম বিষয়ক সহসম্পাদক দীপেন দেওয়ান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।