চাঁদপুর: ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ চাঁদপুরের নদীগুলো উত্তাল হয়ে ওঠেছে। ইতোমধ্যে চাঁদপুরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এ কারণেই শনিবার বিকেল ৪টা থেকে লঞ্চসহ সব ধরনের নৌ-যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক ও চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
এদিকে গত রাত থেকে পুরো চাঁদপুর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। টানা বৃষ্টি ও দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এছাড়াও গত দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে ব্যবসা-বাণিজ্যেও ধস নেমেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় খাওয়ার পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে সর্বত্র। যদিও চাঁদপুর বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ফিডারের সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে তারা সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুল হক জানান, চাঁদপুরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে । ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৮১ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চাঁদপুরের চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের শুকনো খাবার ও অতি প্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রি না করার জন্য সাময়িকভাবে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস ও হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ কে এম মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় চাঁদপুরের ১০৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ২২টি এবং হাইমচরের ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে সদরে ২৪ হাজার এবং হাইমচরে ৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এছাড়াও দুর্যোগে আহতদের সেবা দিতে ৯২টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।