গ্রাম বাংলা ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের কাছে জিয়াউর রহমানের গ্রহণযোগ্যতা ও বিপুল জনপ্রিয়তার কারণেই শেখ মুজিব হত্যার সাথে যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িতরা নিজেদের রক্ষায় জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছেন। ইতিহাস বিকৃতি করছেন।
তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ১৬ আগস্ট। আর জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল। এই সময়ের মধ্যে দুইজন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন হলেন মোশতাক আহমদ। অপরজন বিচারপতি সায়েম। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের ক্ষমতা নিতে চাইলে এত দিন অপেক্ষা করার দরকার ছিল না। কারণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবজনক ও সাহসী ভূমিকার কারণে জিয়াউর রহমান সবসময় দেশের জনগণের কাছে ছিলেন জনপ্রিয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সোমবার তিনি এসব কথা বলেন। পূর্ব লন্ডনের অট্রেয়াম ব্যাংকুয়েটিং হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি এর আয়োজন করে।
সভায় তারেক বলেন, জিয়াউর রহমান হঠাৎ করেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। বাংলা ও বাংলাদেশী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের চেতনা তিনি লালন করেছেন ছাত্রাবস্থা থেকেই। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত একটি জাতির জন্ম শিরোনামে শহীদ জিয়ার একটি লেখার উদ্ধৃতি দেন তারেক রহমান। নিবন্ধে জিয়াউর রহমান লিখেছিলেন, ‘স্কুল জীবন থেকেই পাকিস্তানিদের দৃষ্টিভঙ্গির অস্বচ্ছতা আমার মনকে পীড়া দিতো। আমি জানতাম, অন্তর দিয়ে ওরা আমাদের ঘৃণা করে। বাঙালিদের বিরুদ্ধে একটা ঘৃণার বীজ উপ্ত করে দেয়া হতো স্কুলছাত্রদের শিশু মনেই। সেই স্কুল জীবন থেকেই মনে মনে আমার একটা আকাঙ্খাই লালিত হতো, যদি কখনো দিন আসে, তাহলে এই পাকিস্তানবাদের অস্তিত্বেই আমি আঘাত হানবো। পাকিস্তানি পশুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার, দুর্বারতম আকাক্সা দুর্বার হয়ে উঠতো মাঝে মঝেই। উদগ্র কামনা জাগতো পাকিস্তানের ভিত্তি ভূমিটাকে তছনছ করে দিতে। কিন্তু উপযুক্ত সময় আর উপযুক্ত স্থানের অপেক্ষায় দমন করতাম সেই আকাঙ্খাকে।’
তারেক রহমান বলেন, এ কারণেই দেখা যায় ২৫ মার্চের কালরাতে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্খা দমনে যখন পাকিস্তানিরা সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করেছে, সে দিনের নেতা শেখ মুজিব স্বেচ্ছায় সমর্পণ করেন আর জিয়া হাতে তুলে নেন অস্ত্র।
তারেক রহমান বলেন, যারা এখন বিএনপি কিংবা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অনেকেরই গৌরবজনক অংশগ্রহণ ছিল না। এদের অনেকেই ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিদের কাছে স্বেচ্ছায় সমর্পণের আগে শেখ মুজিবের দেয়া তেল নাকে দিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। এই তেলবাজরাই এখন নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে তেল ব্যবহার করছেন। নিজেরাই নিজেদের মতো করে তৈলাক্ত ইতিহাস রচনা করছেন। তাদের গলাবাজিতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অসহায়।
২১ আগস্ট শেখ হাসিনার জনসভায় হামলা প্রসঙ্গে তারেক রহমান আবারো হামলার ব্যাপারে শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়ে বলেন, তৎকালীন সরকার ও প্রশাসনের কাছে না জানিয়ে কেন হঠাৎ করেই সমাবেশের ভেনু পরিবর্তন করা হলো এটি তদন্ত করে বের করতে হবে। তিনি বলেন, দলীয় পুলিশ কর্মকর্তা যিনি আওয়ামী লীগ থেকে এমপি মনোনয়ন চেয়েছেন তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে তাকে দিয়ে মামলার তদন্ত নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না।
তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের উন্নয়নে জিয়াউর রহমানের দর্শন সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে তারেক রহমান বলেন, জিয়া বিশ্বাস করতেন, কোনো রাজনৈতিক আদর্শ ধর্মকে ভিত্তি করে হতে পারে না। এর একটা অবদান থাকতে পারে। কিন্তু ধর্মকে কেন্দ্র করে কখনোই রাজনীতি করা যেতে পারে না। যে ধর্মকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান সময়ে যখনই রাজনীতি করা হয়েছিল সেটা বিফল হয়েছে। ধর্মের অবদান থাকতে পারে রাজনীতিতে, কিন্তু রাজনৈতিক দল ধর্মকে কেন্দ্র করে হতে পারে না।
তারেক বলেন, আমি কোনো নতুন ইতিহাস বিনির্মাণ করছি না। ইতিহাস লিখবেন ইতিহাসবিদরা। লেখকের লেখায় কিংবা ওই সময়ের ঘটনার যারা সাক্ষী তারা লিখবেন, তারা প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরবেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো হুমায়ুন আহমেদ সত্য ইতিহাস লিখতে গিয়েও তার বইয়ের বিষয়গুলো আদালতের মাধ্যমে সেন্সর করা হয়। আওয়ামী লীগের প্রবীণ এমপি মরহুম এ বি এম মুসা অপ্রিয় সত্য বলার কারণে শেষ বয়সে অপমানিত হতে হয়। এটি অসভ্যতা। এই অসভ্যতা মেনে নেয়া যায় না। এ কারণেই তিনি ইতিহাসের কিছু কঠিন সত্য, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তুলে ধরছেন বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইতিহাসের কঠিন সত্য তুলে ধরার কারণে কিছু লোক উল্টাপাল্টা বলছে। তারেক রহমান হজরত আলীর একটি বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যুক্তিবুদ্ধিহীন মানুষই অশ্লীল কথা বলে।
তারেক আবারো ৭৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য হাসানুল হক ইনু এবং রাশেদ খান মেননের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর হাসানুল হক ইনুর এবং কর্নেল তাহেরের ভূমিকা নিয়ে ২০০৯ সালে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট পড়ে শোনান। রিপোর্টে বলা হয়, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর হাসানুল হক ইনু শাহবাগে বেতার ভবনে গিয়ে অভ্যুত্থানের নায়কদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রতি সর্বান্তকরণে সমর্থন জানিয়েছিলেন, সাথে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল তাহেরও ছিলেন।
রাশেদ খান মেনন সম্পর্কে তারেক রহমান বলে, সেই সময় ১৯৭৫ সালের ২৯ আগস্ট রাশেদ খান মেননের দল, ইউপিপি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মুজিবের অপসারণে জনগণ উল্লসিত। তার মৃত্যু কারো মনে সামান্যতম সমবেদনা বা দুঃখ জাগায়নি, জাগাতে পারে না।’
সভায় তারেক রহমান বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর একটি লেখারও উদ্ধৃতি দেন। তিনি বলেন, শেখ মুজিবকে নিয়ে লেখা সমকালে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ থেকে ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই ঘটনার জের ধরে তৎকালীন ছাত্রলীগের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ ছাত্রলীগের ওই হলের নেতাকর্মীদের মারধর করে। এই খবর পেয়ে তিনি যান শেখ মুজিবের বাসায়। সাথে ছিলেন মরহুম আব্দুর রাজ্জাক। শেখ মুজিবকে ফজলুল হক হলের ঘটনা বলার পর তখন শেখ মুজিব বললেন, ‘লজ্জা করে না, ছাত্রলীগের ছেলে হয়ে মার খেয়ে এসেছিস, ওদের হল থেকে বের করে দে। বাকিটা আমি দেখব।’ তারপর লুঙ্গির ভাঁজ থেকে কিছু একটা বের করে শেখ মুজিব রাজ্জাক সাহেবের হাতে দিলেন, গাড়িতে ওঠার প্রস্তুতি নেয়ার সময় শেখ মুজিব কিছু একটা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর হাতে দিয়ে বললেন, ‘গাড়িতে সবসময় কিছু একটা রাখিস।
তারেক রহমান বলেন, এই হলো আওয়ামী লীগের নেতা। ‘এই কথা একটা কারণেই এখন কোনো প্রতিষ্ঠানেই ছাত্রলীগ ছাড়া আর কেউ নিরাপদে থাকতে পারছে না। তিনি বলেন, এই কিছু একটা ব্যবহার করেই শেখ হাসিনা এখনো ক্ষমতা দখল করে আছেন।’
তারেক রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আহ্বানকারী জিয়াউর রহমানের কারণেই আওয়ামী লীগ এখন নিজ নামে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবের দীর্ঘদিনের রাজনীতির একমাত্র আদর্শ বাকশাল। যারা শেখ মুজিবকে নেতা কিংবা পিতা মনে করেন, তারা আওয়ামী লীগ করে তাদের নেতার আদর্শের সাথেই বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।
তারেক রহমান বলেন, যারা বিএনপির নেতাকর্মী সমর্থক তাদের জানতে হবে, মুক্তিযুদ্ধে বিএনপির ভূমিকা অত্যন্ত গৌরবের। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। হানাদারদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন। ছিনিয়ে এনেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে প্রথম রাষ্ট্রপতি। অত্যন্ত জনপ্রিয় রাজনীতিক ছিলেন। ছিলেন সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা। বাংলাদেশে তার হাত দিয়েই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও তিনিই ফিরে দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে তার মতো নেতা বিরল, যিনি একাধারে প্রতিটি দায়িত্বেই ছিলেন সফল ও জনপ্রিয়। সভায় তারেক রহমান ৭৫ সালের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করেন।
এতে বলা হয়, ১. শেখ মুজিবকে হত্যার পর বাকশাল নেতা মুশতাক রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। গঠন করেন মন্ত্রিসভা। শেখ মুজিব মন্ত্রিসভার প্রায় সবাই মোশতাকের মন্ত্রিসভায় শপথ নেয়।
২. মোশতাক সারা দেশে সামরিক আইন জারি করেন। ওই সময় সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল শফিউল্লাহ।
৩. জিয়াউর রহমান ছিলেন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ।
৪. শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের পর মুশতাক মন্ত্রিসভার শপথে যাননি জিয়াউর রহমান। তবে বিজয়ীর বেশে গিয়েছিলেন তাহের-ইনু বাহিনী এবং তৎকালীন মুজিববিরোধী নেতারা।
৫. শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের পরও তারও কমপক্ষে ১০ দিন অর্থাৎ ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জেনারেল শফিউল্লাই ছিলেন সেনাপ্রধান।
৬. রাষ্ট্রদূত হিসাবে মুশতাক সরকার চাকরি কনফার্ম করার পর সেনাপ্রধানের পদ ছাড়েন। এরপর যথানিয়মে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ থেকে প্রমোশন পেয়ে ২৫ আগস্ট সেনাপ্রধান হন জিয়াউর রহমান।
৭. সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে রক্ষীবাহিনীর প্রভাবমুক্ত একটি শক্তিশালী ও পেশাদার সেনাবাহিনী গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু করেন জিয়াউর রহমান।
৮. জিয়াকে মেনে নিতে পারেননি ব্রিগেডিয়ার রাশেদ মোশাররফ। তিনি ভেতরে ভেতরে জিয়াউর রহমানকে সরানোর চক্রান্ত শুরু করেন।
৯. চক্রান্তের অংশ হিসেবে রাশেদ-মোশাররফ ১৯৭৫ সালের ২ নভেম্বর সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে রাখেন।
১০. ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ৩ নভেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মোশতাকের অনুমোদন নিয়ে মেজর জেনারেল হিসেবে নিজেই নিজের প্রমোশন নেন। এরপর প্রশাসন চলে খালেদ মোশাররফের ইশারায়।
১১. ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোশতাক। তার আগে মোশতাক এবং খালেদ মোশাররফ বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব দেন ৬ নভেম্বর। বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি। শেখ মুজিব পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। এর দু’দিন পর ১২ জানুয়ারি বিচারপতি সায়েমকে প্রধান প্রথম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
১২. পনেরো আগস্ট থেকেই মুশতাক শফিউল্লাহর জারি করা সামরিক আইনে বহাল থাকায় রাষ্ট্রপতি সায়েম একাধারে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকেরও দায়িত্ব পালন করেন। এ দিকে ৭ নভেম্বর সংগঠিত হয় সিপাহি-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব। জিয়াকে বের করে আনা হয় বন্দীদশা থেকে। এরমধ্যে ঘটে যায় অনেক ঘটনা। ৩ নভেম্বর জেলের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয় চার নেতার বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। আর ৬ নভেম্বর পাল্টা ক্যু-তে নিহত হন খালেদ মোশাররফ।
১৩. ১৯৭৭ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি সায়েম।
১৪. এ সময়কালে জিয়া ছিলেন সেনাপ্রধান এবং ডিসিএমএলএ।
১৫. ১৯৭৭ সালের ২০ এপ্রিল প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন বিচারপতি সায়েম। এরপর প্রেসিডেন্ট এবং উত্তরাধিকার হিসেবে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসনের দায়িত্ব নেন জিয়াউর রহমান।
১৬. ১৯৭৮ সালের ৩ জুন সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হওয়ার গৌরব অর্জন করেন জিয়াউর রহমান।
১৮. ১৯৭৮ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচির ওপর জনগণের আস্থা আছে কি না সেটি যাচাইয়ে ৩০ মে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে শতকরা ৯৮ দশমিক ৮৮ ভাগ ভোট পড়ে।
তারেক রহমান বলেন, এসব ঘটনা প্রমাণ করে, জিয়াউর রহমান সামরিক আইন জারি করেননি। ১৫ আগস্ট সামরিক আইন জারি করেন মুশতাক। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি বরং সামরিক আইন প্রত্যাহার করেছিলেন। জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেননি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল মুশতাক সরকার ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। জিয়াউর রহমান দালাল আইন অধ্যাদেশ বাতিল করেননি। ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন বাতিল করেছেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম।
সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমেদ। সভার শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত এবং এরপর দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইউকে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাস। অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সার্বিক দিক তুলে ধরে তারেক রহমানের শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক উপদেষ্টা মাহদী আমিন নির্মিত ‘লং ওয়াক টু ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
প্রায় সোয়া এক ঘণ্টার বক্তৃতায় তারেক রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠা, বিএনপির দর্শন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের উন্নয়নে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা এবং শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর কিছু বিষয় তথ্যপ্রমাণসহ তুলে ধরেন।
সভায় আরো বক্তৃতা করেন, বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরুদ্দিন আহমেদ অসীম, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার নওশাদ জমীর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেক, সাবেক সেক্রেটারি ব্যারিস্টার এম এ সালাম এবং আব্দুল হামিদ চৌধুরীসহ প্রমুখ।