গত বছরের জানুয়ারি মাসে রাজধানীর তেজগাঁও থানার বাসে আগুন দেওয়ার মামলায় আজ বুধবার তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে ডিবি পুলিশ। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনও করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত গ্রেপ্তারের আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে জামিন ও রিমান্ড উভয় আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির ডাকা অবরোধের সময় নাশকতার মামলায় তৌফিক আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক শেখ জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তৌফিক আহমেদ আওয়ামী লীগের নেতা কি না তা আমার জানা নেই। আসামি ঢাকা মহানগর এলাকার সরকার বিরোধী বিভিন্ন অপতৎপরতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ইন্দনদাতা।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
মামলার প্রাথমিক বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ১০ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেট এলাকায় একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিল্লাল হোসেন নামের এক লোক যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরবসহ বিএনপির ১৭ জন নেতার নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন বিএনপির নেতা-কর্মী আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
এর আগে গত ১২ মে চুরির আরেকটি মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আওয়ামী লীগের নেতা তৌফিক আহম্মেদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক ফরিদ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, গুলশান থানার একটি চুরির মামলায় তৌফিকের জামিন বাতিল করে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, আবদুল হান্নান রতন নামের এক লোক গত মার্চ মাসে তৌফিকসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলায় চুরি ও ব্যভিচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। বাদী হান্নান এ মামলায় তার স্ত্রীকেও আসামি করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাদীর বাসা থেকে ২৪ লাখ টাকা চুরি করেছেন। তৌফিকের সঙ্গে তার স্ত্রীর ‘অবৈধ’ সম্পর্ক রয়েছে। এ মামলায় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তৌফিক ও হান্নানের স্ত্রী। পরে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাদীকে হুমকি দেওয়ায় আদালত তৌফিকের জামিন বাতিল করে দেন। আদালতে জমা দেওয়া পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৌফিকের সঙ্গে বাদীর স্ত্রীর ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তৌফিকের আইনজীবী খালেদ মাসুদ মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, তৌফিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাকে ফাঁসানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। মামলার বাদী হলেন ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
তৌফিকের বিরুদ্ধে করা সাধারণ ডায়েরিতে হান্নান উল্লেখ করেছেন, যদি মামলা তুলে না নেয় তাহলে তাঁকে জেলের ভাত খাওয়াবে। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের জ্যেষ্ঠ্য সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হান্নান দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে।
সূত্র প্রথম আলো