বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বুধবার এই আদেশ দেন।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেস্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বন্দর থানার ওসি এবং ইউএনওসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এই আদেশের অনুলিপি দ্রুত সংশ্লিষ্টদের পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এ সময় আদালত বলেন, নারায়ণগঞ্জে শিক্ষককে অপমানের ঘটনা নিষ্ঠুর ও অমানবিক। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাকে অপমানের পর সর্বশেষ যা করা হয়েছে সেটাও অমানবিক। আদালত আরও বলেন, সংবিধানের অভিভাবক সুপ্রিমকোর্ট। এ হিসেবে আমরা চোখ বন্ধ করে রাখতে পারিনা। সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ ঘটনা সংবিধান পরিপন্থী। এ পর্যায়ে রুল জারি করেন।
এর আগে শিক্ষক লাঞ্ছনার ওই ঘটনায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, সিনিয়র অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও শোয়েব আহমেদ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে একদল লোক মারধর করে। পরে তাকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করান স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান। উপস্থিত জনতার কাছে প্রকাশ্যে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয় ওই শিক্ষককে। পরে এমপির নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে পুলিশের হেফাজতে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
দেশজুড়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচার দাবি করছে শিক্ষক-ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এরই মধ্যেই মঙ্গলবার ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম ওসমানসহ জড়িত অন্যদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ওঠে সমালোচনার ঝড়। একপর্যায়ে সরকারের একাধিক মন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষক লাঞ্চনা কারিজড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে