বাগেরহাট: বাগেরহাটে ইডেন কলেজের ছাত্রী শরীফা বেগম পুতুলকে (২১) হত্যা করার অপরাধে তার স্বামী মাহামুদুল আলমকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের তিনদিনের মাথায় খুন হন পুতুল।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচার মিজানুর রহমান খান এ রায় দেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মাহামুদুল আলম জেলার মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের দৈবকান্দি গ্রামের মৃত শামছুল আলম শিকদারের ছেলে। মাহামুদুল আলম জামিনে ছাড়া পেয়ে বর্তমানে পলাতক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, বিয়ের মাত্র তিনদিনের মাথায় ২০১৩ সালের ১৩ মে রাতে মাহামুদ তার স্ত্রী পুতুলকে গলা কেটে হত্যা করেন। পুতুল ঢাকার ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস বিভাগের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৪ মে পুতুলের বাবা দৈবকান্দি গ্রামের মো. আবু দাউদ শেখ বাদী হয়ে মাহামুদের বিরুদ্ধে মোল্লাহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শেখ মোহম্মদ আলী মামলার বরাত দিয়ে বলেন, পুতুলের বড় বোন সাগরিকার স্বামী শাইকুল হলেন মাহমুদের বড় ভাই। আত্মীয়তার সূত্র ধরে পুতুল ও মাহমুদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ঘটনার প্রায় ছয় মাস আগে পুতুল ও মাহমুদ গোপনে বিয়ে করেন। পরে ঘটনা জানাজানি হলে উভয় পরিবার এ সম্পর্ক মেনে নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে দেন। এর তিনদিনের মাথায় ১৩ মে রাতে পুতুলের পরকীয়া রয়েছে বলে ধারণা করেন মাহামুদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেন তিনি। এরপর রাতেই মাহমুদ কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এবং মোল্লাহাট থানায় গিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার কথাও স্বীকার করেন তিনি। পরে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তালাবদ্ধ ঘরের ভেতর থেকে পুতুলের মৃতদেহ ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি উদ্ধার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোল্লাহাট থানার সেই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ন ম খায়রুল আনাম তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ নভেম্বর মাহমুদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এই রায় দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পুতুলের বাবা মো. আবু দাউদ হত্যাকারীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে মৃতুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।