বহুল প্রত্যাশিত বহুমুখী পদ্মা সেতু প্রকল্পে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক আবারো ফিরতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু তাদেরকে ‘পাত্তা’ দেয়নি সরকার।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা আমার সাথে দেখা করে এ প্রকল্পে আবার রিভিউ করার অনুরোধ জানায়। তারা বলেছিল, পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বিষয়ে নতুন চিন্তা করার এখনো সময় আছে। কিন্তু আমরা বলেছি এটা আমাদের সম্মান ও স্বপ্নের প্রকল্প। এ প্রকল্পে আর কাউকে রাখবো না।’
শুক্রবার বহুমুখী পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে প্রকল্প কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রসঙ্গত, কানাডার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনকে পদ্মাসেতু প্রকল্পের কিছু কাজ পাইয়ে দিতে বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার যড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের অনুরোধে রয়্যাল কানাডীয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) বিস্তারিত তদন্ত করে এবং এসএনসি লাভালিনের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা হয়।
ঘুষ লেনদেন ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। পরবর্তীতে দুদক তাদের অব্যাহতি দিলেও ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কানাডার আদালতে মামলা চলছে।
এ ঘটনায় অভিযোগ উঠেছিল বিগত মহাজোট সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। সেই অভিযোগেরও সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
শুক্রবার পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পিলার বসানোর কাজের সঙ্গে পাইলিং বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। পাইলিং শেষ হলে সেতুর মূল কাজ শেষ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু একটি ঐতিহাসিক প্রকল্প। শুধু আমাদের জন্য না আগামী প্রজন্মের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ প্রকল্প ছাড়া আরো বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প এগিয়ে যাচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে মোট দেশজ উৎপাদন- জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরো বাড়বে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা আজকে পদ্মা সেতুর কাজের কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা দেখে গেলেন। আপনাদের মাধ্যমে পুরো জাতিকে এ প্রকল্পের অগ্রগতি সর্ম্পকে জানাতে চাই। আপনাদের মাধ্যমে জানার পর জাতি তা বিশ্বাস করবে। পুরো জাতি উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের সহযোগিতা করবে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পদ্মার এপার-ওপারের কোনো দূরত্ব থাকবে না, একাকার হয়ে যাবে। এপার-ওপারের মানুষের মধ্যেও কোনো বিভেদ থাকবে না।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মাদ তরিকুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক শহিদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।