গ্রাম বাংলা ডেস্ক: পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে মধ্যস্ততার ভূমিকা পালন করতে সম্মত হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং আন্দোলনকারী দুই নেতা সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান ও কানাডাভিত্তিক মওলানা তাহির-উল কাদরি সেনাপ্রধানের সাথে দেখা করে তার সহযোগিতা চান। তাদের অনুরোধ বিবেচনা করে সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই সঙ্কট নিরসন করতে পারবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এর ফলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনীর ভূমিকা আবার বেড়ে গেল বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে এক বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন ইমরান খান ও কাদরি। তারা বর্তমানে রাজধানীতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
ইমরান খান ও তাহির-উল-কাদরি বৃহস্পতিবার রাতে সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের সাথে সাক্ষাত করে জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার সময় ‘মধ্যস্ততাকারী ও নিশ্চয়তাদানকারী’ হিসেবে তার ভূমিকাকে স্বাগত জানাবেন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ সেনাবাহিনীর মধ্যস্ততার ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সাংবিধানিক ও আইনগত ভূমিকা পালন করাটা ইতিবাচক দিক।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও বৈঠক করে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করেন। তিন দিনের মধ্যে সেনাপ্রধানের সাথে এটা ছিল তার দ্বিতীয় বৈঠক।
ইমরান খান নির্বাচনে কারচুপি তদন্তের দাবি করে বলে আসছেন, নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় থাকলে নিরপেক্ষ তদন্ত হবে না। পরে তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সরকার যখন মধ্যস্ততা করতে সেনাবাহিনীকে আমন্ত্রণ জানায়, তখন বোঝা যায় যে এই সঙ্কট নিরসনে কোনো রাজনৈতিক উপায় নেই।’
আর কাদরি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সেনাপ্রধান সমস্যা সমাধানে আমাদের কাছে ২৪ ঘন্টার সময় চেয়েছেন।
তিনি আজ শুক্রবার ১৩০০ জিএমটিতে আবার সমবেত হওয়ার জন্য তার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এই সমাবেশে নতুন কর্মসূচি দেবেন বলে জানিয়েছেন।
নওয়াজ শরিফকে ১৯৯৯ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। তিনি ওই সময়ের সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফকে বরখাস্ত করার উদ্যোগ নিয়ে সেনাবাহিনীই তাকে সরিয়ে দেয়।
ইমরান খান নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন। আর তাহির-উল-কাদরি অন্তর্বর্তী জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের আহ্বান জানাচ্ছেন।
পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পিপিপিসহ অন্যরা ইমরান খান ও তাহির-উল-কাদরির আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দেননি।
এদিকে তাহির-উল-কাদরি গত জুনে তার অন্তত ১০ সমর্থককে হত্যার অভিযোগ এনেছেন নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে তিনি মামলাও করেছেন।