সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে মঙ্গলবারের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় রিভিউ আবেদনটি চার নম্বরে রাখা হয়েছে। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ গত ১০ এপ্রিল শুনানির এ দিন ধার্য করেছিলেন। আদালত ওইদিন বলেছিলেন, ‘এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা। যার নিষ্পত্তির দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে আছে। আর মুলতবির আবেদন গ্রহণ করা হবে না। নির্ধারিত তারিখেই (৩মে) শুনানি হবে।’ এর আগে আসামিপক্ষের দুই দফা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন।
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ হলে থাকবে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়টি। সেটিও নাকচ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবে। সে ক্ষেত্রে চলতি মাসেই ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৫ মার্চ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহালের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রায় প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদনের সুযোগ রাখা হয়। গত ২৯ মার্চ একাত্তরের আল বদর বাহিনীর প্রধান নিজামীর পক্ষে তার ছেলে ব্যারিস্টার নাজীব মোমেন মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। ৭০ পৃষ্ঠার আবেদনে ৪৬টি যুক্তি তুলে ধরে দণ্ড বাতিল ও অভিযোগ থেকে খালাস চাওয়া হয়। আবেদনটি প্রথমে ৩ এপ্রিল ও পরে ১০ এপ্রিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে কার্যতালিকায় আসে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় বৃদ্ধিজীবী হত্যার পাশাপাশি নিজ এলাকা পাবনায় হত্যা, গণহত্যা ও ধর্ষণের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধী নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বে বদরবাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল ও বেকসুর খালাস চেয়ে নিজামীর পক্ষ থেকে আপিল করা হলে চলতি বছর ৬ জানুয়ারি আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ফাঁসির রায় বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত।