নওয়াজের বিরুদ্ধে মামলা

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাদেশ

38861_f6
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তার ভাই পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সহ মোট
২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ১৭ই জুন লাহোরে পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক (পিএটি)’র বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিতে নিহত হন কমপক্ষে ১১ নেতাকর্মী। এ ঘটনায় গতকাল ওই মামলা করা হয়েছে। ওদিকে তিন দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করলেন সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ। এ সময় সেনাপ্রধানকে প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে, ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) ও তাহিরুল কাদরির পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক (পিএটি)’র সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সময় দেশের রাজনীতিতে অচলাবস্থা কাটাতে সঙ্কটের সমাধানের জন্য সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী সংলাপের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। সেনাপ্রধানের কাছে প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার করে বলেন যে, পিটিআই ও পিএটির নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বেশ কিছু বিষয়ে সরকার শিথিলতা দেখিয়েছে। তবে পিটিআই ও পিএটি সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি করেছে, যা সংবিধান বিরোধী। প্রথম দফা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল ২৬শে আগস্ট। তখনও তারা রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে একমত হন। রাজধানী ইসলামাবাদে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত তুরস্ক সফর বাতিল করেছেন নওয়াজ শরিফ। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান গতকাল রাজধানী আঙ্কারায় শপথ নেন। সেই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন। তবে এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেও যাননি প্রধানমন্ত্রী। ওদিকে গতকাল জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণার দাবিতে লাহোর হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে। এ আবেদন জানান পিএটির পাঞ্জাব শাখার সভাপতি আবদুল কাইয়ুম খান। এতে বলা হয়েছে, পরিষদের সদস্যরা সংবিধানের ৬২ ও ৬৩ ধারার মধ্যে পড়েন না। কারণ, তারা স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন নিচ্ছেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন পিটিআই প্রধান ইমরান খান। তার সঙ্গে গতকাল যোগ দিয়েছেন পিটিআইয়ের সিনিয়র নেতা জাভেদ হাশমি। তিনি বলেছেন, তিনি ইমরান খানকে একা দেখতে চান না। ৬৬ বছর বয়সী হাশমি বলেন, আমি অসুস্থ। হাসপাতালে ছিলাম। ইমরানকে এই রাজপথে একা দেখতে চাই না। তাই আমি ছুটে এসেছি। ১০ দিন ধরে ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরি সমর্থকদের নিয়ে অবস্থান করছেন রেড জোনে। তবে তাদের এই আন্দোলনের নেপথ্যে কে তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ নিয়ে নানা কথা চালু হয়েছে দেশে ও বিদেশে। মাত্র তিন দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার কেন সাক্ষাতের প্রয়োজন দেখা দিলো! এমন প্রশ্ন বিশ্লেষকদের। তবে কি সরকারের ওপর কোন চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী! কেন সেনাপ্রধানকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আশ্বস্ত করতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর! কেন মডেল টাউন এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনায় মামলার বিষয়টি সেনাপ্রধানকে জানাতে হলো! কেন প্রধানমন্ত্রীকে ওই মামলায় অভিযুক্ত করা হলো! এমন আলোচনা মুখে মুখে। এর আগেও মডেল টাউন হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়েরের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে মামলা নেয় নি পুলিশ। অবশেষে গতকাল সরকারি নির্দেশে ওই মামলাটি নিবন্ধিত করতে হলো। ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৭ই জুন। কেন এতদিন পরে এ ঘটনায় মামলা হলো! কেন সরকার মামলা নিবন্ধিত করতে নির্দেশ দিলো! তবে কি এর পিছনে তৃতীয় কোন শক্তি রয়েছে, যে কারণে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা নিবন্ধের নির্দেশ দেয়। মডেল টাউন হত্যাকাণ্ডে বিচার বিভাগীয় কমিশনের রিপোর্ট পর্যালোচনা করতে গতকাল পাঞ্জাব সরকার একটি চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। তাহিরুল কাদরির পিএটির সমর্থক ও পুলিশের সংঘর্ষে যে রক্তপাত হয়েছে তার জন্য কে দায়ী তা নির্ধারণ করতে দায়িত্ব দেয়া হয় ওই কমিটিকে। এ কমিটিতে আছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খলিলুর রহমান রামদে, প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পাঞ্জাব এডভোকেট জেনারেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *